| ২৭ জুলাই ২০২৫
শিরোনাম:

গ্রামবাংলার শিক্ষার নতুন দিগন্তে উলিপুর ইসলামিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসা

গ্রামবাংলার শিক্ষার নতুন দিগন্তে উলিপুর ইসলামিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসা

উত্তরের প্রত্যন্ত জনপদ কুড়িগ্রামের উলিপুরে গড়ে উঠেছে একটি ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—উলিপুর ইসলামিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসা ও এম এ মডেল ইংলিশ ভার্সন স্কুল।

প্রিন্সিপাল আব্দুল হাই ফাউন্ডেশনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই এলাকায় সাড়া জাগিয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পাঠদান, কুরআনিক শিক্ষা, এবং মানবিক মূল্যবোধের সমন্বয়ে গড়ে উঠছে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।

শনিবার (২৬ জুলাই ২০২৫) সকাল ১০টায় প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় নাজীরা সবক প্রদান অনুষ্ঠান ও অভিভাবক সমাবেশ। আয়োজনে ছিল শৃঙ্খলা, আন্তরিকতা ও ভবিষ্যতের স্বপ্নময় পরিকল্পনার ছাপ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই কচি কণ্ঠে সুরেলা সুরা কেরাত পরিবেশনা, পরে ছিল একাধিক ইসলামিক গজল, যেগুলো হৃদয় ছুঁয়ে যায় শ্রোতাদের।
বিশেষ আকর্ষণ ছিল – চার ভাষায় (আরবি, বাংলা, ইংরেজি ও উর্দু) কোরআন তেলাওয়াত। প্রতিটি তেলাওয়াত শেষে অনুবাদ ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বক্তব্য উপস্থাপন করে শিক্ষার্থীরা।

ইংরেজি ভাষায় কুরআনের দাওয়াতভিত্তিক বক্তব্য ছিল অনুষ্ঠানটির অন্যতম দৃষ্টান্তমূলক অংশ, যেখানে শিক্ষার্থীরা ইসলামের সৌন্দর্য আধুনিক বিশ্বের সামনে কীভাবে তুলে ধরা যায় তা তুলে ধরে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, আপুয়ার খাতা আলিম মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিকী।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বজরা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ ইয়াহিয়া জুয়েল।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন: মাওলানা মোঃ মসিউর রহমান, আমির, উলিপুর উপজেলা জামায়াতে ইসলামী, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, নজরুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক, তবকপুর ফাজিল মাদ্রাসা ।
অনুষ্ঠানে ১০ জন শিক্ষার্থীকে কুরআন শরীফের নাজীরা ছবক প্রদান করা হয়। তাদের নাম—হুজাইফা ১, হুজাইফা টু, আরাফাত, শরিফুল, ছামি, সোহার্দ, আব্দুল্লাহ, সাজিদ ও আল ইমরান।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “এই প্রতিষ্ঠানের ধর্মীয় মূল্যবোধের চর্চা এবং ডিজিটাল শিক্ষা বাস্তবায়ন সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি একটি মডেল হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষায়।”
সভাপতি মাওলানা আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন,
“শিক্ষার্থীদের শুধু পাঠ্যপুস্তকে সীমাবদ্ধ না রেখে তাদের হৃদয়ে ইসলামের আলো জ্বালানো প্রয়োজন, এবং এই প্রতিষ্ঠান সেটিই করছে।”

শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা কুরআন শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার, ইংরেজি ও সাধারণ শিক্ষাতেও দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পাচ্ছি।”

অভিভাবকদের মধ্যে একজন বলেন, “আমার সন্তান এখানে নিয়মিত নামাজ, নৈতিকতা ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে বড় হচ্ছে—এটাই একজন মায়ের সবচেয়ে বড় শান্তি।”
প্রতিষ্ঠানের প্রধান মাওলানা মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, “আমরা পাঠদানে স্মার্ট বোর্ড, ডিজিটাল কনটেন্ট, অনলাইন ক্লাসসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। পাশাপাশি ধর্মীয় ও চারিত্রিক শিক্ষাকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”

প্রতিষ্ঠানটির স্বপ্ন ও অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য একটি পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরি করা—যিনি ধর্মে অনুগত, সমাজে সেবক এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী।”

উলিপুর ইসলামিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসা ও এম এ মডেল ইংলিশ ভার্সন স্কুল আজ শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়—এটি একটি আদর্শের নাম, একটি আন্দোলনের সূচনা। যেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুরা পাচ্ছে আধুনিক ও ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয়ে একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের প্রস্তুতি।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল: সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা

গ্রামবাংলার শিক্ষার নতুন দিগন্তে উলিপুর ইসলামিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসা

রাজধানীর অন্যতম শীর্ষ সরকারি হাসপাতাল কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এখন স্বাস্থ্যসেবায় একটি অনন্য উদাহরণ। আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা, ডিজিটাল সেবা ও রোগীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলে হাসপাতালটি দেশের অন্যতম শীর্ষ সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এই পরিবর্তনের নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান, যিনি ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সেবার মান উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন।

 

অসাধারণ পরিসর ও রোগী সেবাঃ

বর্তমানে হাসপাতালটি ১,২০০ শয্যাবিশিষ্ট, যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৮০০ থেকে ৮৫০ রোগী ভর্তি থাকে। আজকের হিসাবে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮৪২ জন।বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন গড়ে ৫,৮০০ রোগী প্রতিদিন, যা সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে অন্যতম শীর্ষ অবস্থানে।বহির্বিভাগে ৮০% রোগী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের (FCPS/MS/MD) পরামর্শ পান। মাত্র ১০ টাকার টিকিটে চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করেছে।

 

 

ডায়ালাইসিস ও উন্নত কার্ডিয়াক সেবাঃ

হাসপাতালের ডায়ালাইসিস সেন্টারে প্রতিদিন ১৫৯ জন রোগীর ডায়ালাইসিস করা হয় তিন শিফটে, যা সরকারি হাসপাতালে সবচেয়ে বড় ব্যবস্থাগুলোর একটি।এছাড়া প্রতিদিন গড়ে ১০ জন রোগীকে এঞ্জিওগ্রাফি সেবা দেওয়া হচ্ছে।হৃদরোগীদের জন্য রয়েছে ২৩ শয্যার CCU ও ২০ শয্যার ICU। পাশাপাশি, ৫০ শয্যার নতুন ICU নির্মাণাধীন, যা সম্পন্ন হলে গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা আরও উন্নত হবে।২৪ ঘণ্টা ল্যাবরেটরি সেবা চালু রয়েছে, যা জরুরি চিকিৎসায় সহায়তা করছে।

 

 

ডিজিটাল সেবা ও রোগী-বান্ধব পরিবেশঃ

রোগীরা এখন অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং ও ডিজিটাল পেমেন্ট সুবিধা পাচ্ছেন। এতে লাইন ধরে অপেক্ষার ঝামেলা কমেছে এবং দ্রুত সেবা নিশ্চিত হয়েছে।হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, মানসম্মত খাবার এবং নিরাপত্তা রোগীদের আস্থা অর্জন করেছে।

 

রোগীদের অভিমতঃ

রুবেল হোসেন, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা একজন রোগী বলেন—

এখন অনলাইনে সিরিয়াল বুক করতে পারি। ডাক্তাররা সময় দেন এবং ভালোভাবে শোনেন। সরকারি হাসপাতালে এত সুন্দর সেবা সত্যিই প্রশংসনীয়।

 

সাবিনা আক্তার, একজন ইনডোর রোগীর স্বজন জানান—

খাবারের মান অনেক ভালো। হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং নিরাপদ।

 

রবিউল ইসলাম, আরেকজন রোগী বলেন—

মাত্র ১০ টাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ পাওয়া যায়। আমি কল্পনাও করিনি সরকারি হাসপাতালে এত ভালো সেবা পাওয়া সম্ভব।

 

 

পরিচালকের বক্তব্যঃ

হাসপাতালের উন্নয়নের বিষয়ে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান বলেন—

“দায়িত্ব নেওয়ার পর চেষ্টা করেছি এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে যেখানে রোগীরা মর্যাদার সঙ্গে চিকিৎসা পায়। কোনো অনিয়ম যাতে না থাকে, সেটি নিশ্চিত করাই আমার প্রথম লক্ষ্য। আমরা চাই কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল জাতীয় মানদণ্ডের রেফারেল সেন্টারে পরিণত হোক।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালকে জাতীয় মানের রেফারেল সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে।পরিচালক এই লক্ষ্যে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।

সুন্দরবন নির্ভরশীল নারীদের চারদিনব্যাপী ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ উদ্বোধন

গ্রামবাংলার শিক্ষার নতুন দিগন্তে উলিপুর ইসলামিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসা

সুন্দরবনের উপকূলবর্তী অঞ্চলের জীবন-ঝুঁকিপূর্ণ বননির্ভরতা কমিয়ে নারীদের বিকল্প জীবিকায় উদ্বুদ্ধ করতে “বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক চারদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ” শনিবার (২৮ জুলাই) সকালে উদ্বোধন করা হয়েছে।

কার্বন সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় লিডার্সের আয়োজনে নিজস্ব হল রুমে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন লিডার্স নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল।

প্রশিক্ষণ উদ্বোধনীতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লিডার্স প্রোগ্রাম ম্যানেজার এ.বি.এম. জাকারিয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ব্লু কার্বন প্রকল্পের টিম লিডার রেখা খাতুন।

চার দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল একদল সাহসী ও সংগ্রামী নারী অংশ নিচ্ছেন, যারা নিজেদের জীবনে স্থায়ী পরিবর্তন আনতে আগ্রহী। প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রনজিৎ কুমার মণ্ডল।

প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বক্তারা বলেন অংশগ্রহণকারী নারীদের ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনার প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা প্রদান করা, যাতে তারা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে একটি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব জীবিকা গড়ে তুলতে পারেন। জানা যায় এই কর্মসূচির গবেষণা সহযোগী হিসাবে রয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ।

শুধু বিভাগ নয় এনবিআরের জবাবদিহিতা ও প্রযুক্তিগত সংস্কারও জরুরি: চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান

গ্রামবাংলার শিক্ষার নতুন দিগন্তে উলিপুর ইসলামিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসা

আবদুর রহমান খান : ছবি-সংগৃহীত

শুধু এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) ভাগ করলেই কর ব্যবস্থার সব সমস্যা দূর হবে না, বরং পদ্ধতিগত কাঠামো ভাগের পাশাপাশি জবাবদিহিতা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।

শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর এফডিসিতে অনুষ্ঠিত ‘কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কার ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি’ বিষয়ক ছায়া সংসদে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “বর্তমান অডিট পদ্ধতিতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়। প্রযুক্তি নির্ভর পদ্ধতি নিশ্চিত করতে পারলে এ ভয় দূর হবে।” এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, কর ব্যবস্থাকে আরও নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ সময় কর শিক্ষার প্রসঙ্গে তিনি জানান, বাংলাদেশ কর শিক্ষায় এখনো অনেক পিছিয়ে। তাই শিক্ষার্থীদের মাঝে কর বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে পাঠ্যবইয়ে কর শিক্ষা যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, “একটি আধুনিক, জবাবদিহিমূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর এনবিআর গঠনের মাধ্যমেই টেকসই রাজস্ব আয় নিশ্চিত করা সম্ভব।”

×