| ২৭ জুলাই ২০২৫
শিরোনাম:

মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক: হাড় মস্তিষ্ক ও রক্তে মিলছে বিপজ্জনক কণা

মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক: হাড় মস্তিষ্ক ও রক্তে মিলছে বিপজ্জনক কণা

বিশ্বজুড়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা উদ্বিগ্ন। কারণ, মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার উপস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। রক্ত, লালা, কফ এমনকি স্তন্যদুধেও ইতিমধ্যে এই ক্ষুদ্র কণাগুলোর উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। সর্বশেষ গবেষণায় এগুলো হাড় এবং মস্তিষ্কেও পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে হতে পারে মারাত্মক।

সম্প্রতি বিবিসি’র এক গবেষণাধর্মী প্রতিবেদন জানায়, ইংল্যান্ডের হার্টফোর্ডশায়ারের রথামস্টেড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে সংরক্ষিত ১৮৪৩ সাল থেকে মাটি ও ফসলের নমুনাতেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব মিলেছে। গবেষক অ্যান্ডি ম্যাকডোনাল্ড বলেন, “১৯৬০ সালের পর থেকে প্লাস্টিক ব্যবহারের হার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাইক্রোপ্লাস্টিকও আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।”

📌 মানুষের শরীরে প্রবেশের প্রধান উৎস প্রতি বছর একজন মানুষ গড়ে ৫২,০০০টি মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা গ্রহণ করছেন, যা মূলত খাবার, পানি ও বাতাসের মাধ্যমে শরীরে ঢুকছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৯০ সালের তুলনায় এখন মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণ ছয় গুণ বেশি।

২০২৫ সালের শুরুতে লন্ডনে চালানো একটি পরীক্ষায় দেখা হয়, টি ব্যাগ বা গরম খাবার প্লাস্টিক পাত্রে রাখলে শরীরে কীভাবে মাইক্রোকণা প্রবেশ করে। গবেষণার প্রধান স্টেফানি রাইট বলেন, “রক্তে সবচেয়ে ক্ষুদ্র কণাগুলো প্রবেশের ঝুঁকি বেশি।”

🧠 মস্তিষ্ক, হাড় ও হৃদরোগের ঝুঁকি ২০২৪ সালে চীনা গবেষকরা হাড় ও পেশির ভেতর মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পান, যা শরীরচর্চার ক্ষমতা হ্রাসে ভূমিকা রাখতে পারে। ইতালির এক গবেষণায় ধমনির প্লাকে এই কণা পাওয়া গেছে, যার ফলে হৃদরোগ বা আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি ৪.৫ গুণ বাড়ে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা মৃতদেহের মস্তিষ্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পান। যাদের ডিমেনশিয়া ছিল, তাদের মস্তিষ্কে প্লাস্টিক কণার পরিমাণ ছিল ১০ গুণ বেশি।

🧬 জেনেটিক ক্ষতি ও ক্যান্সার ঝুঁকি অস্ট্রিয়ান গবেষক ভেরেনা পিচলার বলেন, ন্যানোপ্লাস্টিক কোষে প্রবেশ করে ডিএনএ ক্ষতি, দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ইতালির অধ্যাপক রাফায়েল মারফেলা জানান, এই কণাগুলো রক্তনালির সমস্যা, বার্ধক্য ত্বরান্বিত এবং কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করতে পারে।

ইঁদুরের ওপর গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ১০–১০০ মাইক্রোগ্রাম মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণে প্রদাহ ও বিপাকীয় পরিবর্তন ঘটে।

🧪 চিকিৎসা খাতে সরবরাহ ব্যবস্থাও ঝুঁকিপূর্ণ যুক্তরাজ্যের গবেষক ফাই কাউসেইরো বলছেন, হাসপাতালের প্লাস্টিক মাস্ক ও টিউব থেকেও মাইক্রোপ্লাস্টিক রোগীর শরীরে প্রবেশ করতে পারে। বিশেষ করে শ্বাসতন্ত্র রোগীদের জন্য ঝুঁকি আরও বেশি। তিনি হাঁপানির রোগীদের কফ পরীক্ষার মাধ্যমে এসব কণার উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।

✅ সমাধানের উদ্যোগ কী? গবেষকরা চাইছেন, মাইক্রোপ্লাস্টিকের জন্য একটি নিরাপদ মাত্রা নির্ধারণ করে বিশ্বজুড়ে উৎপাদকদের সচেতন করতে। এতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই নিঃশব্দ দূষণ থেকে সুরক্ষা দেওয়া যেতে পারে।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল: সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা

মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক: হাড় মস্তিষ্ক ও রক্তে মিলছে বিপজ্জনক কণা

রাজধানীর অন্যতম শীর্ষ সরকারি হাসপাতাল কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এখন স্বাস্থ্যসেবায় একটি অনন্য উদাহরণ। আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা, ডিজিটাল সেবা ও রোগীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলে হাসপাতালটি দেশের অন্যতম শীর্ষ সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এই পরিবর্তনের নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান, যিনি ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সেবার মান উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন।

 

অসাধারণ পরিসর ও রোগী সেবাঃ

বর্তমানে হাসপাতালটি ১,২০০ শয্যাবিশিষ্ট, যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৮০০ থেকে ৮৫০ রোগী ভর্তি থাকে। আজকের হিসাবে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮৪২ জন।বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন গড়ে ৫,৮০০ রোগী প্রতিদিন, যা সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে অন্যতম শীর্ষ অবস্থানে।বহির্বিভাগে ৮০% রোগী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের (FCPS/MS/MD) পরামর্শ পান। মাত্র ১০ টাকার টিকিটে চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করেছে।

 

 

ডায়ালাইসিস ও উন্নত কার্ডিয়াক সেবাঃ

হাসপাতালের ডায়ালাইসিস সেন্টারে প্রতিদিন ১৫৯ জন রোগীর ডায়ালাইসিস করা হয় তিন শিফটে, যা সরকারি হাসপাতালে সবচেয়ে বড় ব্যবস্থাগুলোর একটি।এছাড়া প্রতিদিন গড়ে ১০ জন রোগীকে এঞ্জিওগ্রাফি সেবা দেওয়া হচ্ছে।হৃদরোগীদের জন্য রয়েছে ২৩ শয্যার CCU ও ২০ শয্যার ICU। পাশাপাশি, ৫০ শয্যার নতুন ICU নির্মাণাধীন, যা সম্পন্ন হলে গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা আরও উন্নত হবে।২৪ ঘণ্টা ল্যাবরেটরি সেবা চালু রয়েছে, যা জরুরি চিকিৎসায় সহায়তা করছে।

 

 

ডিজিটাল সেবা ও রোগী-বান্ধব পরিবেশঃ

রোগীরা এখন অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং ও ডিজিটাল পেমেন্ট সুবিধা পাচ্ছেন। এতে লাইন ধরে অপেক্ষার ঝামেলা কমেছে এবং দ্রুত সেবা নিশ্চিত হয়েছে।হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, মানসম্মত খাবার এবং নিরাপত্তা রোগীদের আস্থা অর্জন করেছে।

 

রোগীদের অভিমতঃ

রুবেল হোসেন, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা একজন রোগী বলেন—

এখন অনলাইনে সিরিয়াল বুক করতে পারি। ডাক্তাররা সময় দেন এবং ভালোভাবে শোনেন। সরকারি হাসপাতালে এত সুন্দর সেবা সত্যিই প্রশংসনীয়।

 

সাবিনা আক্তার, একজন ইনডোর রোগীর স্বজন জানান—

খাবারের মান অনেক ভালো। হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং নিরাপদ।

 

রবিউল ইসলাম, আরেকজন রোগী বলেন—

মাত্র ১০ টাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ পাওয়া যায়। আমি কল্পনাও করিনি সরকারি হাসপাতালে এত ভালো সেবা পাওয়া সম্ভব।

 

 

পরিচালকের বক্তব্যঃ

হাসপাতালের উন্নয়নের বিষয়ে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান বলেন—

“দায়িত্ব নেওয়ার পর চেষ্টা করেছি এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে যেখানে রোগীরা মর্যাদার সঙ্গে চিকিৎসা পায়। কোনো অনিয়ম যাতে না থাকে, সেটি নিশ্চিত করাই আমার প্রথম লক্ষ্য। আমরা চাই কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল জাতীয় মানদণ্ডের রেফারেল সেন্টারে পরিণত হোক।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালকে জাতীয় মানের রেফারেল সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে।পরিচালক এই লক্ষ্যে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।

সুন্দরবন নির্ভরশীল নারীদের চারদিনব্যাপী ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ উদ্বোধন

মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক: হাড় মস্তিষ্ক ও রক্তে মিলছে বিপজ্জনক কণা

সুন্দরবনের উপকূলবর্তী অঞ্চলের জীবন-ঝুঁকিপূর্ণ বননির্ভরতা কমিয়ে নারীদের বিকল্প জীবিকায় উদ্বুদ্ধ করতে “বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক চারদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ” শনিবার (২৮ জুলাই) সকালে উদ্বোধন করা হয়েছে।

কার্বন সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় লিডার্সের আয়োজনে নিজস্ব হল রুমে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন লিডার্স নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল।

প্রশিক্ষণ উদ্বোধনীতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লিডার্স প্রোগ্রাম ম্যানেজার এ.বি.এম. জাকারিয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ব্লু কার্বন প্রকল্পের টিম লিডার রেখা খাতুন।

চার দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল একদল সাহসী ও সংগ্রামী নারী অংশ নিচ্ছেন, যারা নিজেদের জীবনে স্থায়ী পরিবর্তন আনতে আগ্রহী। প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রনজিৎ কুমার মণ্ডল।

প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বক্তারা বলেন অংশগ্রহণকারী নারীদের ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনার প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা প্রদান করা, যাতে তারা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে একটি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব জীবিকা গড়ে তুলতে পারেন। জানা যায় এই কর্মসূচির গবেষণা সহযোগী হিসাবে রয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ।

শুধু বিভাগ নয় এনবিআরের জবাবদিহিতা ও প্রযুক্তিগত সংস্কারও জরুরি: চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান

মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক: হাড় মস্তিষ্ক ও রক্তে মিলছে বিপজ্জনক কণা

আবদুর রহমান খান : ছবি-সংগৃহীত

শুধু এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) ভাগ করলেই কর ব্যবস্থার সব সমস্যা দূর হবে না, বরং পদ্ধতিগত কাঠামো ভাগের পাশাপাশি জবাবদিহিতা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।

শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর এফডিসিতে অনুষ্ঠিত ‘কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কার ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি’ বিষয়ক ছায়া সংসদে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “বর্তমান অডিট পদ্ধতিতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়। প্রযুক্তি নির্ভর পদ্ধতি নিশ্চিত করতে পারলে এ ভয় দূর হবে।” এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, কর ব্যবস্থাকে আরও নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ সময় কর শিক্ষার প্রসঙ্গে তিনি জানান, বাংলাদেশ কর শিক্ষায় এখনো অনেক পিছিয়ে। তাই শিক্ষার্থীদের মাঝে কর বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে পাঠ্যবইয়ে কর শিক্ষা যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, “একটি আধুনিক, জবাবদিহিমূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর এনবিআর গঠনের মাধ্যমেই টেকসই রাজস্ব আয় নিশ্চিত করা সম্ভব।”

×