৪১ বছর পর মু’ক্তি লেবাননে ফিরে আসলেন বিপ্লবী যো’দ্ধা জর্জ ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ

দীর্ঘ ৪১ বছর কারাবাস শেষে অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন লেবাননের ফিলিস্তিনপন্থী বিপ্লবী যোদ্ধা জর্জ ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ। ফ্রান্সে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা ও ইসরায়েলি কূটনীতিককে হত্যার অভিযোগে ১৯৮৪ সালে তাকে গ্রেপ্তার করেছিল ফরাসি পুলিশ।
বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও বিপ্লবী চেতনায় এখনও অটল জর্জ ইব্রাহীমকে শুক্রবার (২৫ জুলাই) বৈরুতের রাফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানান শত শত ভক্ত ও অনুসারী।
বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে ফিলিস্তিনি কেফায়া পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন,
“শত্রুদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। আমরা জয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। ইসরায়েলের অস্তিত্ব অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে।”
জর্জ ইব্রাহীমকে মুক্তি দেওয়ার সময় শর্ত আরোপ করে ফরাসি আদালত, জীবদ্দশায় তিনি যেন আর কখনও ফ্রান্সে প্রবেশ না করেন।
🧭 জর্জ ইব্রাহীম: বিপ্লবীর জীবনের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
১৯৫১ সালে লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় কোবাইয়াত শহরে এক খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম জর্জ ইব্রাহীমের। দর্শনে উচ্চশিক্ষা নিতে ফ্রান্সের টুলুজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে তিনি পরিচিত হন বামপন্থী ও বিপ্লবী চিন্তাধারার সাথে।
১৯৭০ দশকের গৃহযুদ্ধ শুরু হলে মাতৃভূমিতে ফিরে এসে যোগ দেন ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন–জেনারেল কমান্ড (PFLP-GC)-এ।
সশস্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত হওয়ায় পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর রোষানলে পড়েন তিনি। পরে ১৯৮৪ সালে ফ্রান্সের লিওন শহর থেকে গ্রেপ্তার হন। অভিযোগ ছিল, তিনি প্যারিসে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা চার্লস রবার্ট রে ও ইসরায়েলি কূটনীতিক ইয়াকোভ বারসিমানটোভকে হত্যা করেছেন।
🧡 নেতাকে বরণে জনতার ঢল
প্রিয় বিপ্লবী নেতাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে ভিড় করেন শত শত মানুষ। ফুল, পতাকা আর স্লোগানে মুখর ছিল পুরো এলাকাটি।
চোখে জল, বুকে সাহস আর মুখে লড়াইয়ের ভাষা—এই তিনে ভর করেই নতুন অধ্যায়ে পা রাখলেন মধ্যপ্রাচ্যের জীবন্ত কিংবদন্তি জর্জ ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ।