| ১৭ জুলাই ২০২৫
শিরোনাম:

জুলাই সনদ তৈরিতে ধীরগতি: ৫ আগস্টের আগেই চূড়ান্ত করার আহ্বান সালাহউদ্দিন আহমেদের

জুলাই সনদ তৈরিতে ধীরগতি: ৫ আগস্টের আগেই চূড়ান্ত করার আহ্বান সালাহউদ্দিন আহমেদের

সালাহউদ্দিন আহমেদ : ছবি-সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেছেন, জুলাই সনদ তৈরির কাজ অত্যন্ত ধীরগতিতে এগোচ্ছে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা সংস্কার কমিশনকে বলেছিলাম, আগস্টের ৫ তারিখের মধ্যে সনদটি প্রণয়ন করতে। কিন্তু প্রক্রিয়া এখনও গতি পায়নি।’’

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ‘গণ-অভ্যুত্থানের বাঁকবদলের দিন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত এই সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া আমরা পাঁচ মাস আগে কমিশনে জমা দিয়েছি। ৯ জুলাই একটি সংশোধিত সংস্করণ চাওয়া হয়েছিল, সেটিও আমি নিজ হাতে দিয়েছি। এই ঘোষণাপত্র সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতাও তাতে থাকবে।’’

তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান জানিয়ে বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের নামে আর কোনো রাজনীতি চলবে না। তাদের নেতাকর্মী, এমপি, মন্ত্রী, ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের আইনের আওতায় আনা হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সবার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’’

তবে প্রতিশোধের রাজনীতি এড়িয়ে জাতীয় ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা জানিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘যদি আমরা হাজারে হাজারে বিচার করি, তাহলে জাতি বিভক্তি ও প্রতিশোধের আবহে আবদ্ধ থাকবে। এজন্য ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন কাউন্সিল গঠন করে শান্তির পথ খুঁজতে হবে—যেমন দক্ষিণ আফ্রিকাসহ অনেক দেশে হয়েছে। তবে গুম-খুনের সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের ক্ষমা করা হবে না।’’

আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘একদিনে জুলাই আসেনি। ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় রক্তের সিঁড়ি বেয়ে এসেছে এই অভ্যুত্থান। গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে যারা কলঙ্কিত করছে, তারা কি আবার ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন দেখতে চায়?’’

শ্রীলঙ্কার মাটিতে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ প্রথমবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়

জুলাই সনদ তৈরিতে ধীরগতি: ৫ আগস্টের আগেই চূড়ান্ত করার আহ্বান সালাহউদ্দিন আহমেদের

প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে স্পিনার শেখ মেহেদী হাসান আর ওপেনার তানজিদ হাসানের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে ৮ উইকেটে জয় তুলে নেয় টাইগাররা।

বল হাতে বাংলাদেশের জয়ে নেতৃত্ব দেন শেখ মেহেদী। মাত্র ১১ রান খরচায় ৪ ওভারে ৪ উইকেট নিয়ে গড়েছেন নিজের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং ফিগার। ব্যাট হাতে জয়ের ভিত গড়েন তানজিদ হাসান তামিম। ৪৭ বলে ৭৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে ছয়টি বিশাল ছক্কা হাঁকান এই তরুণ ওপেনার।

বুধবার (১৬ জুলাই) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি–টোয়েন্টিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে শ্রীলঙ্কা। শুরুতেই কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে লঙ্কান শিবিরে আঘাত হানেন শরিফুল ইসলাম। এরপর শেখ মেহেদীর স্পিন তোপে একে একে সাজঘরে ফেরেন পেরেরা, চান্দিমাল, আসালাঙ্কা ও নিশাঙ্কা। শ্রীলঙ্কা শেষ পর্যন্ত ১৯ ওভারে ১৩২ রান করতে সক্ষম হয়, শানাকার ২৫ বলে অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংসে।

জবাবে সহজ লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই উইকেট হারালেও ভাঙেনি টাইগারদের মনোবল। লিটন দাসের ২৬ বলে ৩২ ও তানজিদ হাসানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ২১ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। তামিম ৪৭ বলে ৭৩* রানে অপরাজিত থাকেন, তাকে সঙ্গ দেন হৃদয় (২৫ বলে ২৭)।

ম্যাচসেরা হন শেখ মেহেদী হাসান। আর সিরিজসেরা টাইগার অধিনায়ক লিটন দাস, যিনি ব্যাট হাতে ১১৪ রান করেন তিন ম্যাচে।

এ জয়ের মাধ্যমে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে ইতিহাস গড়লো টাইগাররা। আগামী ২০ জুলাই মিরপুরে শুরু হবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

চীনে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে জাপানি নাগরিকের সাড়ে তিন বছরের কা’রাদণ্ড

জুলাই সনদ তৈরিতে ধীরগতি: ৫ আগস্টের আগেই চূড়ান্ত করার আহ্বান সালাহউদ্দিন আহমেদের

চীনের একটি আদালত গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এক জাপানি নাগরিককে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। বেইজিংয়ে জাপানি দূতাবাসের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে জাপানি সংবাদমাধ্যম কিয়োদো নিউজ।

বুধবার (১৬ জুলাই) স্থানীয় সময় বেইজিংয়ের ইন্টারমিডিয়েট পিপলস কোর্ট অ্যাস্টেলাস ফার্মা ইনক. নামের জাপানি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানির ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানায়।

চীনে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত কেনজি কানাসুগি সাংবাদিকদের বলেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। জাপান সরকার দ্রুত তার মুক্তির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা ও কূটনৈতিক সহায়তা চালিয়ে যাবে।”

জানা গেছে, ওই জাপানি নাগরিককে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে চীন ছাড়ার আগে আটক করা হয়। পরবর্তীতে একই বছরের অক্টোবরে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার করা হয় এবং ২০২৪ সালের আগস্টে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে মামলা গঠন করা হয়।

চীন ও জাপানের মধ্যে এমন স্পর্শকাতর ইস্যু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে নতুন করে চাপে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

১৭ জুলাই থেকে দেশজুড়ে গণআন্দোলনে রূপ নেয় কোটা বিরোধী আন্দোলন

জুলাই সনদ তৈরিতে ধীরগতি: ৫ আগস্টের আগেই চূড়ান্ত করার আহ্বান সালাহউদ্দিন আহমেদের

কোটা সংস্কার আন্দোলন ২০২৫ সালে নতুন মাত্রা পায় ১৭ জুলাই থেকে। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুর পরই আন্দোলন রূপ নেয় গণআন্দোলনে। ১৬ জুলাই পুলিশের হামলায় সাঈদের মৃত্যু বিক্ষুব্ধ ছাত্রসমাজকে ক্ষিপ্ত করে তোলে, যা আন্দোলনের বাঁক ঘুরিয়ে দেয়।

পরদিন ১৭ জুলাই ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ছাত্রলীগমুক্ত করতে মাঠে নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হল থেকে বের করে দিয়ে হলগুলো ‘ছাত্রলীগমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, ‘‘নারী হলগুলো মুক্ত হওয়ার পর মহসীন হলসহ একের পর এক হল ছাত্রলীগের দখলমুক্ত করা হয়।’’

একই দিনে সারাদেশে নিহত হন আবু সাঈদ, ওয়াসিমসহ অন্তত ছয়জন শিক্ষার্থী। নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে গায়েবানা জানাজার আয়োজন করা হলেও পুলিশি হামলা, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জে তা ব্যাহত হয়। বিকেলে ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জানাজা পড়েন আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, স্নাইপার ও সোয়াট টিম মোতায়েন করে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা চলে। এছাড়া সারাদেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সশস্ত্র হামলায় আহত হন শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ।

১৭ জুলাই রাতেই ঢাকার যাত্রাবাড়ি, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ শুরু হয়। যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা, যা ৫ আগস্ট পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে। আন্দোলনকারীরা একে ‘জুলাই আন্দোলনের লেলিনগ্রাদ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

সন্ধ্যার মধ্যে ক্যাম্পাস ও হল ফাঁকা করতে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয় পুলিশ। সেই রাতেই মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় সরকার, কিন্তু এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালো শাড়ি পরে শোক প্রকাশ করলেও, সেটি জনগণের ক্ষোভ আরও উসকে দেয়। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সমালোচনা ও ট্রল।

সবশেষে ১৮ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা করে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির হামলা সত্ত্বেও সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে গণআন্দোলন।

×