| ১৭ জুলাই ২০২৫
শিরোনাম:

তফসিলে নৌকা প্রতীক কেন? নির্বাচন কমিশনকে উপদেষ্টার প্রশ্ন

তফসিলে নৌকা প্রতীক কেন? নির্বাচন কমিশনকে উপদেষ্টার প্রশ্ন

আসিফ মাহমুদ : ছবি-সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হলেও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তফসিলে নৌকা প্রতীক এখনই বাদ দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ। তবে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

গত মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, ‘অভিশপ্ত নৌকা মার্কাটাকে আপনারা কোন যুক্তিতে আবার শিডিউলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠালেন? সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই গণঅভ্যুত্থানকে আপনারা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন। কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এই মার্কা রাখছেন?’

তিনি আরও লেখেন, ‘পরাজিতদের স্বপ্নের রিফাইন্ড আওয়ামী লীগকে তাদের মার্কা ফিরিয়ে দিতে চান? একজন নাগরিক হিসেবে নির্বাচন কমিশনের কাছে এর জবাব চাই।’

পোস্টের মন্তব্যে আসিফ মাহমুদ আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি সরকারে বসে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্ন করছি না, করছি একজন নাগরিক হিসেবে। নির্বাচন কমিশন কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়। তাদের জবাবদিহি রাষ্ট্রের জনগণের কাছে।’

এর আগে গত রোববার (১৩ জুলাই) নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানান, ‘আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হলেও নির্বাচনী প্রতীকের তালিকা থেকে নৌকা প্রতীক আপাতত বাদ দেওয়া হচ্ছে না। কারণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলে কোনো দলের প্রতীক বাতিলের সুযোগ নেই।’

নৌকা প্রতীক তফসিলে রাখা এবং এর পেছনে রাজনৈতিক অঙ্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

১৭ জুলাই থেকে দেশজুড়ে গণআন্দোলনে রূপ নেয় কোটা বিরোধী আন্দোলন

তফসিলে নৌকা প্রতীক কেন? নির্বাচন কমিশনকে উপদেষ্টার প্রশ্ন

কোটা সংস্কার আন্দোলন ২০২৫ সালে নতুন মাত্রা পায় ১৭ জুলাই থেকে। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুর পরই আন্দোলন রূপ নেয় গণআন্দোলনে। ১৬ জুলাই পুলিশের হামলায় সাঈদের মৃত্যু বিক্ষুব্ধ ছাত্রসমাজকে ক্ষিপ্ত করে তোলে, যা আন্দোলনের বাঁক ঘুরিয়ে দেয়।

পরদিন ১৭ জুলাই ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ছাত্রলীগমুক্ত করতে মাঠে নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হল থেকে বের করে দিয়ে হলগুলো ‘ছাত্রলীগমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, ‘‘নারী হলগুলো মুক্ত হওয়ার পর মহসীন হলসহ একের পর এক হল ছাত্রলীগের দখলমুক্ত করা হয়।’’

একই দিনে সারাদেশে নিহত হন আবু সাঈদ, ওয়াসিমসহ অন্তত ছয়জন শিক্ষার্থী। নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে গায়েবানা জানাজার আয়োজন করা হলেও পুলিশি হামলা, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জে তা ব্যাহত হয়। বিকেলে ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জানাজা পড়েন আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, স্নাইপার ও সোয়াট টিম মোতায়েন করে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা চলে। এছাড়া সারাদেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সশস্ত্র হামলায় আহত হন শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ।

১৭ জুলাই রাতেই ঢাকার যাত্রাবাড়ি, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ শুরু হয়। যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা, যা ৫ আগস্ট পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে। আন্দোলনকারীরা একে ‘জুলাই আন্দোলনের লেলিনগ্রাদ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

সন্ধ্যার মধ্যে ক্যাম্পাস ও হল ফাঁকা করতে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয় পুলিশ। সেই রাতেই মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় সরকার, কিন্তু এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালো শাড়ি পরে শোক প্রকাশ করলেও, সেটি জনগণের ক্ষোভ আরও উসকে দেয়। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সমালোচনা ও ট্রল।

সবশেষে ১৮ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা করে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির হামলা সত্ত্বেও সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে গণআন্দোলন।

ফরিদপুর রাজবাড়ি ও মানিকগঞ্জে পদযাত্রা ও পথসভা কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি

তফসিলে নৌকা প্রতীক কেন? নির্বাচন কমিশনকে উপদেষ্টার প্রশ্ন

পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে আজ ফরিদপুর, রাজবাড়ি ও মানিকগঞ্জে কর্মসূচি পালন করছে। ফরিদপুর শহরের জনতা ব্যাংক মোড়ে সকাল থেকেই সমাবেশের প্রস্তুতি দেখা গেছে। খুলনা থেকে নেতাকর্মীরা এরই মধ্যে সমাবেশে যোগ দিতে রওনা হয়েছেন।

জেলা শাখার নেতাকর্মীরা জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা প্রথমে ফরিদপুরের সার্কিট হাউসে পৌঁছে সেখান থেকে পথসভা করে জনতা ব্যাংক মোড়ে মূল সমাবেশস্থলে আসবেন।

সমাবেশ শেষে ফরিদপুরের আলিপুরে এনসিপির জেলা কার্যালয় উদ্বোধন করা হবে। পাশাপাশি জুলাই মাসে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন নেতারা।

ফরিদপুরের কর্মসূচি শেষ হলে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা রাজবাড়ি ও মানিকগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সেখানেও স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে পথসভা ও গণসংযোগের কর্মসূচি রয়েছে।

এনসিপি নেতারা আশা করছেন, এ কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের মাঝে দলটির বার্তা আরও শক্তভাবে পৌঁছে যাবে।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

তফসিলে নৌকা প্রতীক কেন? নির্বাচন কমিশনকে উপদেষ্টার প্রশ্ন

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক শূন্য দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) বিপিএম-৬ (BPM6) পদ্ধতিতে নিট রিজার্ভের পরিমাণ ২৪ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার।

বুধবার (১৬ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬ জুলাই পর্যন্ত দেশে মোট গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ৩০,০২৬.৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিপরীতে, IMF এর হিসাব অনুযায়ী BPM6 পদ্ধতিতে নিট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪,৯৯৫.৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

এর আগে, গত মে-জুন মাসের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (ACU) ২০১ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। ফলে রিজার্ভ কিছুটা কমলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা পুনরায় বাড়তে শুরু করেছে।

গত ৭ জুলাই নিট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৪.৪৫ বিলিয়ন ডলার এবং মোট রিজার্ভ ছিল ২৯.৫২ বিলিয়ন ডলার। এরপরে ২ জুলাই নিট রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৬.৬৮ বিলিয়ন ডলার এবং মোট রিজার্ভ ছিল ৩১.৭১ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক দায় বাদ দিলে নিট রিজার্ভের পরিমাণ হিসাব করা হয়, যা BPM6 পদ্ধতিতে নির্ধারিত।

×