লিবিয়ায় ৯ মাস বন্দি থাকার পর দেশে ফিরলেন ঝিনাইদহের সাগর ও কুষ্টিয়ার তানজির

লিবিয়ার মাফিয়া চক্রের হাতে ৯ মাস বন্দি থেকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হওয়া ঝিনাইদহের মতিউর রহমান সাগর ও কুষ্টিয়ার তানজির শেখ অবশেষে দেশে ফিরেছেন। বুধবার (৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টায় বুরাক এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তাঁরা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এদিন তাঁদের সঙ্গে আরও ১৬২ জন বাংলাদেশি লিবিয়া থেকে দেশে ফেরেন।
ব্র্যাকের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২৩ সালে গ্রামের এক দালালের প্রলোভনে সাগর ও তানজির চার লাখ টাকা খরচ করে লিবিয়ায় পাড়ি জমান। ভালো চাকরির আশ্বাসে লিবিয়া গেলেও সেখানে কোনো কাজ না পেয়ে তাঁদের ইতালিতে পাচারের চেষ্টা চলে। একপর্যায়ে স্থানীয় এক মাফিয়া চক্রের হাতে বিক্রি করে দেওয়া হয় তাঁদের। আরও ৮০ জন বাংলাদেশির সঙ্গে অন্ধকার একটি ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হতো। বাড়ি থেকে মুক্তিপণের টাকা আদায়ে লোহার রড, লাঠি ও বৈদ্যুতিক শক ব্যবহার করে তাঁদের ওপর অমানবিক অত্যাচার করা হয়।
শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় মাফিয়া চক্র তাঁদের মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে কোনোভাবে ত্রিপোলিতে এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেন দুই তরুণ। এরপর পরিবার ব্র্যাকের সহায়তা চেয়ে আবেদন করে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ট্রাফিকিং ইন পারসনস (টিআইপি) অফিস ও ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশনের সহায়তায় আইওএম হেডকোয়ার্টারের মাধ্যমে তাঁদের উদ্ধার করে সেইফ হোমে নেওয়া হয়।
সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে দেশে ফেরানো হয় তাঁদের। ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থাপক আল-আমিন নয়ন জানান, সাগর, তানজির ও একইভাবে জিম্মি হওয়া আলমগীর হোসেনসহ মোট ১৬২ জন বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রত্যাবাসন শুধু দেশে ফেরা নয়, এটি বেঁচে থাকার লড়াইয়ের অংশ। নিরাপদ ভবিষ্যতের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’