| ১২ জুলাই ২০২৫
শিরোনাম:

বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫% শুল্ক ঘোষণা বিপাকে পোশাক খাত

বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫% শুল্ক ঘোষণা বিপাকে পোশাক খাত

ডোনাল্ড ট্রাম্প : ছবি-সংগৃহীত

বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ আগস্ট থেকে এ শুল্ক কার্যকর হবে বলে সোমবার (৮ জুলাই) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে জানিয়েছেন তিনি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, সামনে আরও কিছু দেশকে শুল্কবিষয়ক চিঠি দেওয়া হতে পারে।

ট্রাম্পের এই ঘোষণায় দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সর্ববৃহৎ একক বাজার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ প্রায় ৮৬৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা দেশের মোট রপ্তানির ১৮ শতাংশেরও বেশি। এর মধ্যে ৮৫ শতাংশই তৈরি পোশাক।

গত ৩ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও তখন দর-কষাকষির সুযোগ রেখে তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছিল। ফলে এতদিন বাংলাদেশের পণ্যের গড় শুল্কহার ছিল ১৫ শতাংশ, নতুন ৩৫ শতাংশ যোগ হয়ে সেটি দাঁড়াবে প্রায় ৫০ শতাংশে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা সক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ট্রাম্প এক চিঠিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, বাংলাদেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে যুক্তরাষ্ট্রও শুল্কের হার আরও বাড়াবে। তবে ১ আগস্টের কার্যকর তারিখের আগে দর-কষাকষির সুযোগ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তারা ওয়াশিংটনে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। আগামী ৯ জুলাই আরেক দফা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক সরঞ্জাম, বোয়িং উড়োজাহাজ, এলএনজি, গম ও তুলা আমদানি সহজ করার বিষয়েও আলোচনা চলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিয়েতনাম ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা করে শুল্ক ৪৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে এনেছে, ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় তারা এগিয়ে যাবে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা অভিযোগ করেছেন, বেসরকারি খাতকে দর-কষাকষি প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করা হয়নি, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এখনই বিকল্প বাজার খুঁজতে হবে, দ্বিপক্ষীয় আলোচনার গতি বাড়াতে হবে এবং পণ্য ও বাজার বৈচিত্র্য আনতে হবে। না হলে শীর্ষ বাজারে এই ‘বাণিজ্যিক ভূমিকম্প’ তৈরি পোশাকসহ পুরো রপ্তানি খাতকে বড় ধরনের ধাক্কা দিতে পারে।

‘ডিসেম্বরে নির্বাচন ঠেকাতে ষড়যন্ত্র চলছে’—অভিযোগ বিএনপি নেতার

বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫% শুল্ক ঘোষণা বিপাকে পোশাক খাত

দেশে চলমান হত্যাকাণ্ড ও নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।

শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। ফারুক বলেন, ‘‘প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডসহ নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এতে কান না দিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে তার কথা রাখার আহ্বান জানাই।’’

সম্প্রতি মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘ছাত্রদল ও যুবদল এই ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছে, দায়ীদের বহিষ্কার করেছে। অথচ হারুন, বিপ্লবদের বিরুদ্ধে আমি যে মামলা করেছিলাম, তা নিয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তারা কোথায়, কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না—এটা জনগণকে জানাতে হবে।’’

ফারুক আরও বলেন, ‘‘মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করতে হবে। আওয়ামী লীগের সময়ে ব্লগার অভিজিৎ রায়কে ফুটপাতে কুপিয়ে হত্যা করা হলেও তখন আওয়ামী লীগ কাউকে বহিষ্কার করেনি। অথচ বিএনপি চেয়ারপারসন তারেক রহমান এই ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জড়িতদের আজীবন বহিষ্কার করেছেন।’’

তিনি দাবি করেন, তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে লন্ডনে হওয়া বৈঠক এবং ফেব্রুয়ারির নির্বাচনী প্রস্তুতিকে বানচাল করতে পরিকল্পিতভাবে এমন ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। ‘‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার যখন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন, তখনই এই হত্যাকাণ্ড ও বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করা হলো,’’—বলেন ফারুক।

সবশেষে তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘‘যে কোনো ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা ও সংসদীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে আপনার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন।’’

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীর হাতে ফিলিস্তিনি-মার্কিন যুবক নি’হত

বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫% শুল্ক ঘোষণা বিপাকে পোশাক খাত

ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় এক ফিলিস্তিনি-মার্কিন যুবক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। নিহত ওই যুবকের নাম সাইফ আল-দিন কামেল আবদুল করিম মুসাল্লাত। তার বয়স বিশের কোঠায়।

ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, শুক্রবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় রামাল্লার উত্তরের সিনজিল শহরে বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হামলায় আরও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত মুসাল্লাত যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের টাম্পার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি কিছুদিনের জন্য ফিলিস্তিনে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তার কাজিন ফাতমা মোহাম্মদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘তিনি একেবারেই নিরস্ত্র ছিলেন, অথচ নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’’

ওয়াশিংটন পোস্টের খবর অনুযায়ী, নিহতের পরিবারের উদ্ধৃতিতে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরাই তাকে হত্যা করেছে।

ফিলিস্তিনি এক চিকিৎসা কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, একই এলাকায় আরেকজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য দেয়নি।

এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়াও এসেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘পশ্চিম তীরে এক মার্কিন নাগরিকের মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। তবে নিহতের পরিবারের গোপনীয়তা রক্ষার্থে বিস্তারিত কিছু বলা হবে না।’’

এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, সিনজিল শহরে ইসরায়েলি নাগরিকদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার পর বসতি স্থাপনকারীদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে কয়েকজন ইসরায়েলিও আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ‘অপ্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহার করেছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

২০২৩ সালে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের হামলা ও সহিংসতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।

এর আগেও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি-মার্কিন নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ, কিশোর ওমর মোহাম্মদ রাবেয়া এবং মানবাধিকারকর্মী আয়সেনুর ইজগি আয়গিও পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত ২০২৩ সালে জানিয়েছিল, পশ্চিম তীরসহ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারি ও অবৈধ বসতি স্থাপন আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী এবং সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাহার করা উচিত। তবে ইসরায়েল নিজেদের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় অধিকার দেখিয়ে সেই অবস্থান মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে।

এই হত্যাকাণ্ড পশ্চিম তীরের দখল, দমন-পীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্রকে আরও একবার বিশ্বমঞ্চে সামনে এনেছে।

জোতার মৃ’ত্যুতে শোক লিভারপুলের ২০ নম্বর জার্সি অবসরে

বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫% শুল্ক ঘোষণা বিপাকে পোশাক খাত

স্পেনে সড়ক দুর্ঘটনায় লিভারপুল তারকা দিয়োগো জোতা এবং তার ভাই আন্দ্রে সিলভার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ ফুটবল বিশ্ব। গত ৩ জুলাই ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পর থেকেই লিভারপুল সমর্থকরা প্রিয় তারকার ২০ নম্বর জার্সিটি চিরতরে অবসরে পাঠানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

সমর্থকদের আবেগের প্রতি সম্মান জানিয়ে লিভারপুল ক্লাব কর্তৃপক্ষ জোতার স্ত্রী রুতে কার্দোসো এবং পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পর জোতার জার্সি নম্বরটি অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এক বিবৃতিতে ক্লাব জানিয়েছে, ‘‘এই সিদ্ধান্ত দিয়োগো জোতার কেবল মাঠের পারফরম্যান্স নয়, ক্লাবের সবার জীবনে তার ব্যক্তিগত প্রভাবকেও স্মরণ করিয়ে দেবে।’’

লিভারপুলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল এডওয়ার্ডস এই সিদ্ধান্তকে ‘একজন অনন্য অসাধারণ ব্যক্তির প্রতি একটি অনন্য শ্রদ্ধা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘২০ নম্বর জার্সি অবসরে পাঠানোর মাধ্যমে আমরা এটিকে চিরকালীন করে রাখছি—তাকে কখনো ভোলা যাবে না।’’

জোতার মৃত্যুর পর লিভারপুলের প্রথম ম্যাচ হবে রোববার, যেখানে তারা প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হবে চ্যাম্পিয়নশিপ দল প্রেস্টন নর্থ এন্ডের বিপক্ষে।

×