| ১ জুলাই ২০২৫
শিরোনাম:

‘জুলাই অভ্যুত্থান’ স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

‘জুলাই অভ্যুত্থান’ স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘স্বৈরাচার পতনে যেন আর ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয়— সেই কাজই আমরা করছি। প্রতি বছর জুলাই গণঅভ্যুত্থান পালন করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ স্বৈরাচার হতে চাইলে জনগণ সঙ্গে সঙ্গে তাদের পতন ঘটাতে পারে। কারণ, জনগণ রাস্তায় নামলে কোনো শক্তি থামাতে পারে না।’

মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে’ মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গত ২৪ জুন পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ‘জুলাই স্মৃতি উদযাপন’ কর্মসূচির বিস্তারিত ঘোষণা করা হয়। এই কর্মসূচি আজ ১ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।

ঘোষিত সূচি অনুযায়ী, আজ প্রথম দিন দেশের সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় শহীদদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি আজই ‘জুলাই ক্যালেন্ডার’ প্রকাশ ও হত্যাকাণ্ডের খুনিদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু হয়েছে, যা চলবে ১ আগস্ট পর্যন্ত। এদিন জুলাই শহীদদের স্মরণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবৃত্তিও চালু করা হবে।

অনুষ্ঠানগুলো প্রতিদিন নয়, বিরতি দিয়ে পর্যায়ক্রমে আয়োজন করা হবে। যেমন ১ জুলাইয়ের পর পরবর্তী অনুষ্ঠান হবে ৫ জুলাই, এরপর ৭ জুলাই ও ১৪ জুলাই।

সবচেয়ে বড় আয়োজন হবে ৫ আগস্ট (যা কর্মসূচির ভাষায় ‘৩৬ জুলাই’ হিসেবে উল্লেখ)। ওই দিন ৩৬ জেলার কেন্দ্রে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদ পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, মানিক মিয়া এভিনিউ অভিমুখে বিজয় মিছিল, এয়ার শো, গানের অনুষ্ঠান, ‘৩৬ ডেস অব জুলাই’সহ বিভিন্ন ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও ড্রোন শো আয়োজনের কথা রয়েছে।

রাষ্ট্রদ্রোহ ও নির্বাচনী অনিয়ম মা’মলায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিচ্ছেন সাবেক সিইসি নুরুল হুদা

‘জুলাই অভ্যুত্থান’ স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

কে এম নুরুল হুদা: ছবি-সংগৃহীত

রাষ্ট্রদ্রোহ এবং জাতীয় নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের খাস কামরায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করা শুরু হয়।

আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক উপপরিদর্শক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নুরুল হুদার জবানবন্দি রেকর্ড প্রক্রিয়া এখনও চলমান।

এর আগে গত ২২ জুন রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসভবনে একদল জনতার হামলার শিকার হন নুরুল হুদা। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং আদালত তাকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠান। গত সোমবার পুলিশ তার আরও ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে।

‘প্রহসনের নির্বাচন’ আয়োজনের অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সম্প্রতি শেরেবাংলা নগর থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২০১৪ সালের তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের সিইসি কে এম নুরুল হুদা এবং ২০২৪ সালের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সংগঠন নিয়ে সমঝোতা: ঢাবি ক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা সমালোচনায় ছাত্র সংগঠনগুলো

‘জুলাই অভ্যুত্থান’ স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের ২০২৫-২৬ মেয়াদের কার্যকরী কমিটি বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল এবং আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীলদলের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। সোমবার রাতে কলা অনুষদের ডিন ও নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান ১৫ সদস্যের এ কমিটি ঘোষণা করেন।

ঘোষিত কমিটিতে সাদা দলের পক্ষ থেকে সভাপতি ও ছয়জন সদস্য এবং নীল দলের পক্ষ থেকে সেক্রেটারি ও ছয়জন সদস্য আছেন। সম্পাদক হয়েছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান, যিনি নীল দলের হয়ে দুইবার শিক্ষক সমিতিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এছাড়া সহ-সভাপতি হয়েছেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম এবং যুগ্ম সম্পাদক হয়েছেন ড. রাদ মুজিব লালন। কমিটিতে রয়েছেন আরও কয়েকজন নীল দলের সিন্ডিকেট সদস্য ও আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত শিক্ষকও।

ছাত্র সংগঠনগুলো এই সমন্বিত কমিটি গঠনের তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের ঢাবি শাখা নেতারা বলেন, ফ্যাসিবাদে যুক্ত থাকা শিক্ষকরা পুনর্বাসিত হলে নতুন ফ্যাসিবাদের আশঙ্কা তৈরি হবে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, নীল দল ও সাদা দল কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন নয়। শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতেই এই কমিটি গঠিত হয়েছে।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকীর মতে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক রাজনীতি ও গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হয়ে থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক: জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নির্দেশনা পেয়েছেন সিইসি

‘জুলাই অভ্যুত্থান’ স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। বৈঠকটি ঘিরে নানা জল্পনা থাকলেও এবার তার কিছুটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন সিইসি নিজেই।

মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি জানান, প্রধান উপদেষ্টা তাকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি আরও জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছেন।

সিইসি বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান। আমরা জানিয়েছি, কমিশন পুরোপুরি প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের কাছে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চান।’

জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘তারিখ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। নির্দিষ্ট তারিখ ঠিক হলে নির্বাচন কমিশনই তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে।’

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন সিইসি নাসির উদ্দিন। বিএনপি এ বৈঠকের বিষয়বস্তু স্পষ্ট করার দাবি জানালেও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

×