| ২৫ জুন ২০২৫
শিরোনাম:

নরওয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস: অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দেবে নরওয়ে — অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ

নরওয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস: অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দেবে নরওয়ে — অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ

বাংলাদেশের চলমান সংকটকালীন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সমর্থনের বার্তা নিয়ে ঢাকায় এসেছেন নরওয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী স্টাইন রেনাতে হোইহেম। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্র অতিথি ভবন যমুনায় তিনি সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে। সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি স্পষ্ট জানান, নরওয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে রয়েছে এবং থাকবে।

সাক্ষাতে হোইহেম বাংলাদেশের প্রতি নরওয়েজিয়ান সরকারের শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন এবং প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার স্টোরের পক্ষ থেকে ইউনূসকে ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা ও শুভকামনা জানান। তিনি বলেন, “আপনি শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, নরওয়েজিয়ান নাগরিকদের কাছেও একজন প্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্ব। আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই আপনার মানবিক নেতৃত্বের কথা স্মরণ করেন।”

অধ্যাপক ইউনূস দুই দেশের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করে বলেন, “বাংলাদেশের নানা সংকটে নরওয়ে আমাদের পাশে থেকেছে। আমাদের উন্নয়নের সহযাত্রায় আপনাদের অবদান চিরস্মরণীয়।”

বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ইউনূস বলেন, “গত জুলাইয়ের গণজাগরণে অনেক ত্যাগ হয়েছে, বহু জীবন ঝরে গেছে। আর্থিক দিক থেকেও আমরা ভয়াবহ সংকটে পড়েছি। আগের সরকার প্রতিবছর বিদেশে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। ঋণগুলো শুধু বিতরণই নয়, কার্যত উপহার হিসেবে বিলি করা হয়েছে। আজ আমরা সেই ঋণের বোঝা টানছি।”

তবে হতাশার মাঝেও আশার আলো দেখছেন ইউনূস। তিনি বলেন, “সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিডা সামিটে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বহু কোম্পানি বাংলাদেশে এসেছে বাস্তবতা দেখার জন্য। তাদের মধ্যে নরওয়ের কোম্পানিও ছিল। তারা কৌতূহল ও আশাবাদ নিয়ে এসেছে—এটাই আমাদের জন্য বড় আশাবাদের বিষয়।”

রোহিঙ্গা সংকটের কথাও উঠে আসে আলোচনায়। ইউনূস বলেন, “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আজ মানবিক সংকটে পড়ে আছে। যাদের শিশুকালে আশ্রয় দিয়েছিলাম, তারা এখন কিশোর। প্রতিদিন নতুন শিশু জন্ম নিচ্ছে এই অনিশ্চয়তার মাঝে। তারা ফিরে যেতে চায়, কিন্তু বাস্তবতা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমরা যেন তাদের ভুলে না যাই।”

প্রতিমন্ত্রী হোইহেম বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যু একটি গভীর মানবিক চ্যালেঞ্জ, আর বাংলাদেশ যেভাবে এটি সামাল দিচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা চাই, এই সম্পর্ক কেবল উন্নয়ন সহায়তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে—এটি যেন আরও বিস্তৃত ও গতিশীল অংশীদারত্বে পরিণত হয়।”

সাক্ষাতে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. মোশারফ হোসেন।

ওবায়দুল কাদেরের আমলে দুর্নীতিতে ছেয়ে গিয়েছিল সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়, ফাঁস হলো কমিশনের খেলা

নরওয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস: অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দেবে নরওয়ে — অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ

আওয়ামী লীগ সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে ওবায়দুল কাদের ছিলেন সবচেয়ে ক্ষমতাধর মন্ত্রীদের একজন। দীর্ঘ সাড়ে ১২ বছর তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। নিজের মুখে বারবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর বক্তব্য দিলেও বাস্তবে তার নেতৃত্বে মন্ত্রণালয়টি পরিণত হয়েছিল একটি শক্তিশালী কমিশন সিন্ডিকেটে।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ওবায়দুল কাদের ঘুষ নয়, কমিশনের মাধ্যমে দুর্নীতির পথ তৈরি করেছিলেন। সড়ক ও সেতু বিভাগের যেকোনো কাজ পেতে হলে ঠিকাদারদের ২০ শতাংশ কমিশন দিতে হতো। এ কমিশন প্রকল্প বাজেটের মধ্যেই যোগ করা হতো, যাতে তা আইনগতভাবে ধরা না পড়ে। এমনকি ছোট কাজেও কমিশন বাধ্যতামূলক ছিল।

সড়ক বিভাগে ১২ বছরে প্রায় এক লাখ কোটি টাকার বেশি লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। সওজ বা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া ১ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে নির্মাণকাজে। এর ৭২ শতাংশ কাজ পেয়েছে মাত্র ১৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, যারা কাদেরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এবং নিয়মিত কমিশন দিয়ে আসছিল।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে সড়ক নির্মাণ খাতে প্রতি কিলোমিটার ব্যয় ভারত ও ইউরোপের তুলনায় অনেক বেশি। মূলত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রকল্প প্রস্তাবে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো হতো, যার বড় অংশ যেত কমিশন হিসেবে।

সরকারি ক্রয় আইন অনুযায়ী, প্রকল্প অনুমোদন ও কার্যাদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা থাকার কথা থাকলেও, বাস্তবে দেখা যায় কমিশন না দিলে ঠিকাদারদের কালো তালিকাভুক্ত করা হতো। শুধু ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৪৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে কমিশনের টাকা না দেওয়ার অভিযোগে।

মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম ছিল এমনভাবে সাজানো, যাতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে অর্থ লেনদেন ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়। ডিপিপি প্রস্তুতের সময়েই ঠিক করে রাখা হতো কে কাজ পাবে, কোন খাতে কত টাকা যাবে এবং কত কমিশন বরাদ্দ থাকবে। প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিশনেও ঘুষ দিতে হতো বলে অভিযোগ রয়েছে।

ওবায়দুল কাদের, তার স্ত্রী, ভাই ও আত্মীয়দের নামে অনেক প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়েছে, যার মাধ্যমে তিনি ও তার পরিবার উপকৃত হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতাও এসব প্রতিষ্ঠানের পেছনে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

কেবল অর্থ নয়, প্রকল্পের পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন এবং অনুমোদনের প্রতিটি ধাপে দুর্নীতির বিস্তৃতি ছিল ভয়াবহ। কখনো হাওরের জমি অধিগ্রহণ করে সড়ক বানানো হয়েছে, যার ব্যবহার নেই বললেই চলে। কোথাও আবার পরিবেশগত ছাড়পত্র পেতে ঘুষ দিতে হয়েছে।

সবমিলিয়ে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ওবায়দুল কাদেরের মন্ত্রণালয় ছিল কমিশন নির্ভর এক দুর্নীতির কেন্দ্রবিন্দু। যেখানে যোগ্যতা নয়, কমিশনই ছিল কাজ পাওয়ার প্রধান শর্ত।

এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ২৬ জুন, পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে ডিএমপির নতুন নির্দেশনা

নরওয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস: অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দেবে নরওয়ে — অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ

২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন সকাল ১০টা থেকে। পরীক্ষাকে সুশৃঙ্খল ও নির্বিঘ্ন করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) পরীক্ষার্থীদের যাতায়াত, যান চলাচল ও নিরাপত্তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে।

 

ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এবারের এইচএসসি পরীক্ষা ঢাকার ৮৭টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। যাতে পরীক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেন এবং কোনো রকম যানজট বা বিশৃঙ্খলার সম্মুখীন না হন, সেজন্য জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

 

যানবাহন ব্যবস্থাপনা ও চলাচলের নির্দেশনা:

ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে কেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে সতর্কতা:

যেসব পরীক্ষার্থী বা অভিভাবক ব্যক্তিগত গাড়িতে কেন্দ্রে আসবেন, তাদেরকে কেন্দ্রের সামনের সড়কে না নেমে, আশেপাশের কম ব্যস্ত সড়কে নেমে হেঁটে কেন্দ্রে আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই নিয়ম পরীক্ষার পর ফেরার সময়েও মানতে হবে।

 

কেন্দ্রের আশেপাশে গাড়ি পার্কিং নিষিদ্ধ:

পরীক্ষাকেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় যানবাহন পার্কিং সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। নির্দেশনা অমান্য করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি।

 

অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ:

অভিভাবকদেরকে কেন্দ্র সংলগ্ন সড়কে দাঁড়িয়ে না থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থান করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কারণ এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে, যা সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

 

সাধারণ যাত্রীদের জন্য নির্দেশনা:

পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে থেকে শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা পর পর্যন্ত পরীক্ষাকেন্দ্র এলাকার সড়কগুলো পরীক্ষা ব্যতীত অন্যান্য যাত্রীদের পরিহার করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ডিএমপির আহ্বান:

ডিএমপি বলছে, “পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে আমাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা ও পরীক্ষার্থীদের সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছাতে সহায়তা করাটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”

দুদকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর পোস্ট, অভিযোগে মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ

নরওয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস: অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দেবে নরওয়ে — অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ

জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্ট নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের দাবি—সেই পোস্টে দুদকের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে মানহানিকর অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং ভুল তথ্যনির্ভর।

আজ মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দুদক জানায়, তারা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং স্পষ্টভাবে বলতে চায়—ফেসবুকে করা ওই পোস্টের তথ্য বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

দুদকের ব্যাখ্যা:
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি একটি প্রতারক চক্র দুদক চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তাদের পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে মামলা থেকে অব্যাহতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ধরনের প্রতারণার ঘটনায় দুদক ইতোমধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং চক্রের একাধিক সদস্যকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

“হাসনাত আব্দুল্লাহ যাচাই না করেই ফেসবুকে মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন”—বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

ভবিষ্যতে সতর্ক থাকার আহ্বান:দুদক জানায়, অতীতেও বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে এ ধরনের প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবুও অনেকে বিভ্রান্ত হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুদকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, যা কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।

সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে দুদক আরও বলেছে—কোনো ব্যক্তি যদি ফোন, মেসেজ বা ব্যক্তিগতভাবে দুদক কর্মকর্তার পরিচয়ে টাকা দাবি করে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে টোল-ফ্রি হটলাইন ১০৬-এ যোগাযোগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে নিকটস্থ দুদক কার্যালয় বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিতে বলা হয়েছে।

×