ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত ও জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমণি—একদিকে যেমন রূপালি পর্দায় তার অভিনয়ে মুগ্ধ দর্শক, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনের নানা আলোচনায় থাকেন সংবাদের শিরোনামে। কখনো মেজাজ হারানো, কখনো কঠিন কথাবার্তা—এসব কারণে প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। তবে এবার মনে হচ্ছে পরীমণি নিজেই তার ভেতরে একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন।
গত শুক্রবার (১৬ মে) রাজধানীতে অনুষ্ঠিত বাইফা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ‘রঙিলা কিতাব’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন পরীমণি। একইসঙ্গে এই সিনেমাটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সেরা কন্টেন্ট হিসেবেও স্বীকৃতি পায়। এই দ্বৈত সাফল্য উদযাপন করতে করতে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি, জানিয়ে দেন তার জীবনের এক নতুন উপলব্ধির কথা।
“আমি সবকিছু নিতে পারি না, রিঅ্যাক্ট করে ফেলি”
মনের কথা খুলে বললেন পরীমণি। জানালেন, ‘আর দশটা সাধারণ মানুষের মতো আমারও আবেগ আছে—রাগ, দুঃখ, কষ্ট, অভিমান হয়। আমি অনেক কিছু সহ্য করতে পারি না। হঠাৎ করেই রিঅ্যাক্ট করে ফেলি। কিন্তু আমার সেই প্রতিক্রিয়া মানুষ নিতে পারে না। বলে—নায়িকা হয়ে এসব করা যায় না!’
এই অবস্থানেই যেন সবচেয়ে বেশি হতাশ পরীমণি। তার ভাষায়, ‘এই বাউন্ডারির মধ্যে পড়ে গেছি। তখন মনে হয়, জাস্ট অ্যাভয়েড করি।’
“সব ঝামেলা নিয়েই বাঁচতে শিখেছি”
নিজেকে আড়াল করতে চেয়েও পারেন না—এ নিয়ে আক্ষেপ ঝরে পড়ে তার কণ্ঠে। বলেন, ‘আমি যত চেয়েছি ঝামেলা এড়িয়ে, নিজেকে আড়াল করে জীবন উপভোগ করব, ঠিক ততটাই ঝামেলা এসে জেঁকে বসেছে আমার জীবনে। এখন বুঝেছি, এইসব ঝামেলা নিয়েই আমাকে বাঁচতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখন আর আনন্দ করতে পারি না। শুধু কাজ আর আমার দুই বাচ্চাকে নিয়ে থাকতে চাই। এখন আর কোনো কষ্ট নিতে চাই না। এত কষ্ট নেওয়ার মতো জায়গা নেই। একটা জিনিস খুব ভালোভাবে শিখেছি—অ্যাভয়েড করা। জাস্ট অ্যাভয়েড করো এবং সুখে থাকো।’
জয় উদযাপন ছেলের সঙ্গে
পুরস্কার হাতে নিয়ে অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফিরেই ছেলে পূণ্যর সঙ্গে কয়েকটি হাস্যোজ্জ্বল মুহূর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন পরীমণি। হাতে দুইটি ট্রফি, পাশে সন্তান—এই চিত্র যেন এক আবেগঘন বার্তা দিচ্ছিলো।
ছবির ক্যাপশনে লিখেন, “আমার এই অর্জন আমার দর্শকের জন্য উৎসর্গ করছি। এটা আপনাদের।”
পরীমণির পরিবর্তন – শুরু নাকি উপলব্ধি?
শোবিজ জগতে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনায় থাকা এই তারকা বারবার বিতর্কে জড়ালেও তার অভিনয় দক্ষতা নিয়ে কখনোই প্রশ্ন তোলেনি কেউ। তবে ব্যক্তিগত জীবন আর আবেগের বহিঃপ্রকাশ বারবার তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে।
কিন্তু এবার যেন ভিন্ন পরীমণিকে দেখছেন দর্শক। একটি উপলব্ধি, একটি আত্মসমালোচনাই হয়তো তাকে আরো সংযত, পরিণত নায়িকায় রূপান্তর করবে—এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা।
