| ২৮ জুন ২০২৫
শিরোনাম:

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধঃ গ্রেপ্তারে আর নেই আইনি বাধা, অনলাইনে নজরদারিও জোরদার

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধঃ গ্রেপ্তারে আর নেই আইনি বাধা, অনলাইনে নজরদারিও জোরদার

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধঃ গ্রেপ্তারে আর নেই আইনি বাধা, অনলাইনে নজরদারিও জোরদার

 

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় দলটির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে আর কোনো আইনি জটিলতা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর থেকেই মাঠপর্যায়ে দলটির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা সহজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি আদেশ জারির পর সমাবেশ, মিছিল কিংবা গোপন বৈঠকে অংশ নিলেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা যাবে। এ নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এরইমধ্যে দেশের সব থানায় নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সরাসরি নির্দেশনা

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, “নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো কার্যক্রম ঢাকা রেঞ্জে চলতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার এসপিদের স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, যদিও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজে-কলমে আদেশ জারি হয়নি, তবুও কার্যত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে দলটির পক্ষে কেউ কোনো ধরনের মিছিল, সভা বা বৈঠক করলে, সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারবে।

সামাজিক মাধ্যমে তৎপরতা পেলেই মামলা

শুধু মাঠপর্যায়েই নয়, অনলাইন বা সামাজিক মাধ্যমেও আওয়ামী লীগের পক্ষে কোনো ধরনের পোস্ট, মন্তব্য বা ভিডিও শেয়ার করলেই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি বিদেশে বসে দলের পক্ষে প্রচারণা চালালেও দেশে ফিরলে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখার এক কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, “ফেসবুক, ইউটিউব কিংবা টুইটারে কেউ আওয়ামী লীগের পক্ষে কিছু বললে, পোস্ট দিলে বা মন্তব্য করলেও সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করা যাবে। দেশে ফিরলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।”

আইনগত দৃষ্টিকোণ থেকে স্পষ্ট বার্তা

সাবেক আইজিপি নূরুল হুদা বলেন, “নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারে আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না। সরকারের আদেশ অনুযায়ী পুলিশ এখন বৈধভাবে ব্যবস্থা নিতে পারবে।”

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম জানান, দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারা অনুযায়ী, সরকারের কোনো আদেশ অমান্যকারীকে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। এখন এই ধারা অনুযায়ী গ্রেপ্তার ও শাস্তি কার্যকর হবে।

অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও নিষেধাজ্ঞা আসছে

এদিকে, অনলাইনে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বন্ধে নেওয়া হয়েছে কড়া পদক্ষেপ। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, “শুধু অফলাইনে নয়, অনলাইনেও আওয়ামী লীগের উপস্থিতি নিষিদ্ধ করা হবে। এর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকারি পরিপত্র জারি হলেই বিটিআরসির মাধ্যমে ফেসবুক, ইউটিউব ও অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে দলটির সকল কার্যক্রম বন্ধে চিঠি পাঠানো হবে। বর্তমানে ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নামে দলের একটি ভেরিফায়েড পেজে প্রায় ৪০ লাখ অনুসারী রয়েছে। সেটিও নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করা হবে।

কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে ফের সড়ক অবরোধ, খুলনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধঃ গ্রেপ্তারে আর নেই আইনি বাধা, অনলাইনে নজরদারিও জোরদার

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগের দাবিতে ফের উত্তাল খুলনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শনিবার (২৮ জুন) বেলা ৩টা থেকে কেএমপি কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ফলে খানজাহান আলী রোডে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।

বিক্ষোভকারীরা জানান, সম্প্রতি খানজাহান আলী থানা এলাকায় উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দাসকে আটক করে স্থানীয় লোকজন ও বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের হাতে তুলে দিলেও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অথচ এই এসআই’র বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও বিএনপির খুলনা মহানগর সভাপতি শফিকুল আলম মনার বাড়ি ভাঙচুরসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে দাবি তাদের। পরে পুলিশ সুকান্তকে গ্রেফতার করলেও কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন থামেনি।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, খুলনায় দিন দিন আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটছে। হত্যা, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও চোরাচালান রোধে প্রশাসনের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই বলে তারা দাবি করেন। সব অপরাধের দায়ভার নিয়ে অবিলম্বে কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করেন তারা। তা না হলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষুব্ধরা।

এর আগে বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কমিশনারের পদত্যাগের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। একই দাবিতে বিএনপিও আগে আল্টিমেটাম দেয়।

স্থানীয়দের আশঙ্কা, কমিশনারের পদত্যাগ দাবি ঘিরে খুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।

শ্যামনগরে উৎসব মুখর পরিবেশে হিন্দুধর্মীয় উৎসব রথযাত্রা অনুষ্ঠিত

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধঃ গ্রেপ্তারে আর নেই আইনি বাধা, অনলাইনে নজরদারিও জোরদার

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় উৎসবমুখর পরিবেশে বিভিন্ন স্থানে হিন্দু ধর্মীয় উৎসব রথযাত্রা মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উপজেলা সদরের গোপালপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, বল্লভপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, ভূরুলিয়া সোনামুগারী শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, হরিনগর সাধু পাড়া শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, মুন্সিগঞ্জ ধানখালী শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির সহ অন্যান্য মন্দিরের আয়োজনে শুক্রবার (২৭ জুন) শ্রী শ্রী জগন্নাথ বলদেব ও সুভদ্রা মহারানীর রথযাত্রা মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা সদরের গোপালপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরের রথটি বিকাল ৪ টায় গোপালপুর মন্দির থেকে সহস্রাধিক ভক্তবৃন্দ ধর্মীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে উৎসব মুখর পরিবেশে টেনে নিয়ে নকিপুর হরিতল সার্বজনীন মন্দিরে রাখেন। নকিপুর হরিতলা থেকে একটি রথ টেনে ভক্তবৃন্দ বল্লভপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে রাখেন।

 

গোপালপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে রথযাত্রা উৎসবের পূর্বে মন্দির চত্তরে মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রী পাদ কৃষ্ণ সখা দাস ব্রক্ষ্মচারীর সার্বিক পরিচালনায় আলোচনাসভায় অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি নেতা এ্যাড, সৈয়দ ইফতেখার আলী, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ শ্যামনগর উপজেলা শাখার সভাপতি রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড, কৃষ্ণ পদ মন্ডল, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ শ্যামনগরের সভাপতি বিষ্ণু পদ মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক কিরণ শংকর চ্যাটার্জী, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণানন্দ মুখ্যার্জী, জেলা ও উপজেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ শ্যামনগর উপজেলার নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ শ্যামনগরের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

আলোচনাসভার মাঝে মাঝে ধর্মীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন মন্দিরের ভক্তবৃন্দ সহ অন্যান্য ভক্তবৃন্দ। আলোচনাসভা শেষে প্রসাদও বিতরণ করা হয়।

সকল রথযাত্রা উৎসবে ভক্তবৃন্দ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে রথের দড়ি ধরে ধীরে ধীরে টেনে টেনে নিয়ে যান গন্তব্য স্থলে।

সিইসি-প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের আলোচ্য বিষয় প্রকাশের দাবি বিএনপির

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধঃ গ্রেপ্তারে আর নেই আইনি বাধা, অনলাইনে নজরদারিও জোরদার

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, নির্বাচন কমিশনার ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে জনসমক্ষে তুলে ধরা উচিত।

 

শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেলে গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

তিনি বলেন, আমরা শুনেছি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দীনের মধ্যে একান্ত বৈঠক হয়েছে। রাজনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয়টি নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। তবে জনগণের জানার অধিকার আছে—তারা কী নিয়ে আলোচনা করেছেন।

 

বিএনপি নেতার মতে, বৈঠকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে পরোক্ষ বার্তা দেওয়া হতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের ধারণা, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনকে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন এ মুহূর্তে বাস্তবসম্মত নয়। দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচনই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।

 

সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, “জামায়াত স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে থাকলেও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচন আগে চায়। আমাদের আন্দোলনের লক্ষ্যও সেটিই। নির্বাচন কমিশনের মূল দায়িত্ব হলো অবাধ, সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা।”

 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ থেকে নির্বাচন পরিচালনায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।

×