| ২৮ জুন ২০২৫
শিরোনাম:

পুঁজিবাজারে আস্তা ফেরাতে প্রধান উপদেষ্টার ৫ নির্দেশনা

পুঁজিবাজারে আস্তা ফেরাতে প্রধান উপদেষ্টার ৫ নির্দেশনা

দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা, কারসাজি ও লুটপাটে বিপর্যস্ত দেশের শেয়ারবাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই নির্দেশনাগুলো দেন তিনি।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট করে বলেন, “শেয়ারবাজারকে যে অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা অকল্পনীয়। আমাদের অবশ্যই এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে হবে। শেয়ারবাজার যেন আর লুটেরাদের আড্ডাখানা না হয়, বরং এটি যেন হয় মানুষের আস্থার কেন্দ্র। এজন্য অবিলম্বে সংস্কার জরুরি।”

প্রধান উপদেষ্টার পাঁচ নির্দেশনা

(১) সরকারি মালিকানাধীন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর শেয়ার পুঁজিবাজারে ছাড়া:
যেসব বহুজাতিক কোম্পানির মালিকানায় সরকার অংশীদার, তাদের শেয়ার পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এতে বাজারে মানসম্পন্ন শেয়ারের পরিমাণ বাড়বে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে।

(২)দেশীয় বড় বেসরকারি কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আনতে প্রণোদনা:
বেসরকারি খাতের সুপ্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর বাজারে তালিকাভুক্তি নিশ্চিত করতে উৎসাহমূলক নীতিমালা ও আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা নিতে হবে।

(৩) তিন মাসের মধ্যে পুঁজিবাজার সংস্কারে বিদেশি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ:
পুঁজিবাজারে স্বার্থান্বেষী মহলের কারসাজি ঠেকাতে এবং বাজারকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে তিন মাসের মধ্যে কার্যকর সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।

(৪)অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা:
যারা শেয়ারবাজার লুটপাট করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সর্বস্ব হারিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। অপরাধীদের বিচারের আওতায় না আনলে বাজারে আস্থা ফিরবে না।

(৫) ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা কমাতে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্ড ও ইক্যুইটিতে উৎসাহ:
বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো যেন ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে পুঁজিবাজার থেকে তহবিল সংগ্রহে আগ্রহী হয়—এ জন্য নীতিগত সহায়তা ও সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

 

শেয়ারবাজারে আস্থার সংকট—সংস্কারই একমাত্র পথ

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “গত কয়েক দশকে পুঁজিবাজারকে যারা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় না আনলে জনগণের আস্থা ফেরানো যাবে না। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই—পুঁজিবাজারকে একটি নিরাপদ, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব জায়গায় পরিণত করা।”

তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন, বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত সংস্কার কার্যক্রম চলবে। সরকার এ বিষয়ে আপসহীন থাকবে।

উপস্থিত ছিলেন শীর্ষ অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকরা

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্দেশনাগুলো যদি বাস্তবায়ন হয় এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তাহলে পুঁজিবাজারে নতুন করে আস্থা ফিরতে পারে।

কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে ফের সড়ক অবরোধ, খুলনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি

পুঁজিবাজারে আস্তা ফেরাতে প্রধান উপদেষ্টার ৫ নির্দেশনা

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগের দাবিতে ফের উত্তাল খুলনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শনিবার (২৮ জুন) বেলা ৩টা থেকে কেএমপি কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ফলে খানজাহান আলী রোডে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।

বিক্ষোভকারীরা জানান, সম্প্রতি খানজাহান আলী থানা এলাকায় উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দাসকে আটক করে স্থানীয় লোকজন ও বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের হাতে তুলে দিলেও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অথচ এই এসআই’র বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও বিএনপির খুলনা মহানগর সভাপতি শফিকুল আলম মনার বাড়ি ভাঙচুরসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে দাবি তাদের। পরে পুলিশ সুকান্তকে গ্রেফতার করলেও কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন থামেনি।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, খুলনায় দিন দিন আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটছে। হত্যা, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও চোরাচালান রোধে প্রশাসনের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই বলে তারা দাবি করেন। সব অপরাধের দায়ভার নিয়ে অবিলম্বে কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করেন তারা। তা না হলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষুব্ধরা।

এর আগে বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কমিশনারের পদত্যাগের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। একই দাবিতে বিএনপিও আগে আল্টিমেটাম দেয়।

স্থানীয়দের আশঙ্কা, কমিশনারের পদত্যাগ দাবি ঘিরে খুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।

শ্যামনগরে উৎসব মুখর পরিবেশে হিন্দুধর্মীয় উৎসব রথযাত্রা অনুষ্ঠিত

পুঁজিবাজারে আস্তা ফেরাতে প্রধান উপদেষ্টার ৫ নির্দেশনা

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় উৎসবমুখর পরিবেশে বিভিন্ন স্থানে হিন্দু ধর্মীয় উৎসব রথযাত্রা মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উপজেলা সদরের গোপালপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, বল্লভপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, ভূরুলিয়া সোনামুগারী শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, হরিনগর সাধু পাড়া শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, মুন্সিগঞ্জ ধানখালী শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির সহ অন্যান্য মন্দিরের আয়োজনে শুক্রবার (২৭ জুন) শ্রী শ্রী জগন্নাথ বলদেব ও সুভদ্রা মহারানীর রথযাত্রা মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা সদরের গোপালপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরের রথটি বিকাল ৪ টায় গোপালপুর মন্দির থেকে সহস্রাধিক ভক্তবৃন্দ ধর্মীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে উৎসব মুখর পরিবেশে টেনে নিয়ে নকিপুর হরিতল সার্বজনীন মন্দিরে রাখেন। নকিপুর হরিতলা থেকে একটি রথ টেনে ভক্তবৃন্দ বল্লভপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে রাখেন।

 

গোপালপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে রথযাত্রা উৎসবের পূর্বে মন্দির চত্তরে মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রী পাদ কৃষ্ণ সখা দাস ব্রক্ষ্মচারীর সার্বিক পরিচালনায় আলোচনাসভায় অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি নেতা এ্যাড, সৈয়দ ইফতেখার আলী, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ শ্যামনগর উপজেলা শাখার সভাপতি রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড, কৃষ্ণ পদ মন্ডল, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ শ্যামনগরের সভাপতি বিষ্ণু পদ মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক কিরণ শংকর চ্যাটার্জী, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণানন্দ মুখ্যার্জী, জেলা ও উপজেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ শ্যামনগর উপজেলার নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ শ্যামনগরের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

আলোচনাসভার মাঝে মাঝে ধর্মীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন মন্দিরের ভক্তবৃন্দ সহ অন্যান্য ভক্তবৃন্দ। আলোচনাসভা শেষে প্রসাদও বিতরণ করা হয়।

সকল রথযাত্রা উৎসবে ভক্তবৃন্দ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে রথের দড়ি ধরে ধীরে ধীরে টেনে টেনে নিয়ে যান গন্তব্য স্থলে।

সিইসি-প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের আলোচ্য বিষয় প্রকাশের দাবি বিএনপির

পুঁজিবাজারে আস্তা ফেরাতে প্রধান উপদেষ্টার ৫ নির্দেশনা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, নির্বাচন কমিশনার ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে জনসমক্ষে তুলে ধরা উচিত।

 

শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেলে গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

তিনি বলেন, আমরা শুনেছি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দীনের মধ্যে একান্ত বৈঠক হয়েছে। রাজনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয়টি নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। তবে জনগণের জানার অধিকার আছে—তারা কী নিয়ে আলোচনা করেছেন।

 

বিএনপি নেতার মতে, বৈঠকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে পরোক্ষ বার্তা দেওয়া হতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের ধারণা, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনকে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন এ মুহূর্তে বাস্তবসম্মত নয়। দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচনই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।

 

সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, “জামায়াত স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে থাকলেও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচন আগে চায়। আমাদের আন্দোলনের লক্ষ্যও সেটিই। নির্বাচন কমিশনের মূল দায়িত্ব হলো অবাধ, সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা।”

 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ থেকে নির্বাচন পরিচালনায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।

×