মঙ্গলবার, ১৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আন্দোলনের প্রস্তুতি? গোপনে ঢাকামুখী হচ্ছেন আওয়ামী নেতাকর্মীরা

আবাসন নিউজ২৪ নিউজ ডেস্কঃ

সরকার পরিবর্তনের পর হঠাৎ করেই ঢাকামুখী হতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বিষয়টি গোপন থাকলেও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজর এড়ায়নি। তাদের হাতে আসা একটি গোপন রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ফেরানোর’ দাবিতে রাজধানীতে একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের পরিকল্পনা করছে দলটি। এ লক্ষ্যে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই ঢাকায় সমবেত হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দলীয়ভাবে।

 

গোয়েন্দা রিপোর্টটি প্রকাশে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। সম্ভাব্য অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই পুলিশের পক্ষ থেকে সারা দেশে, বিশেষ করে চট্টগ্রাম অঞ্চলে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।

 

৯ এপ্রিল (বুধবার) চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিএসবি) থেকে সব থানায় একটি চিঠি পাঠানো হয়। এতে সম্ভাব্য অস্থির পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ সদস্যদের জন্য ৮ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:

 

সন্দেহভাজনদের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ,

 

মামলাভুক্তদের মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার,

 

গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত চেকপোস্ট স্থাপন,

 

নৌঘাট, রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে নজরদারি বৃদ্ধি,

 

বিএনপি ও জামায়াতপন্থি নেতাদের সহায়তায় ঢাকামুখী যাত্রা প্রতিহত করা,

 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিদাতাদের চিহ্নিতকরণ,

 

অর্থদাতাদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ,

 

ভাড়ায় চালিত যানবাহন ও টার্মিনালগুলোর ওপর নজরদারি।

 

 

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের সময় সাময়িক ধাক্কা এলেও এখন পুলিশের মনোবল পুনরুদ্ধার হয়েছে। নিয়মিত অভিযান চলছে এবং অপরাধে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।’

 

এছাড়া চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মাহমুদা বেগম জানান, ‘নগরীতে পুট ও নাইট পেট্রোল, নতুন চেকপোস্ট বসানো এবং মিনি টিম গঠন করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন  ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক: লন্ডন গেলেন বিএনপি নেতা আমির খসরু

 

চট্টগ্রাম জেলা ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জুনায়েত কাউছার বলেন, ‘আমি নির্দিষ্ট কোনো চিঠির বিষয়ে নিশ্চিত না হলেও, হুমকি বা গুজবের ভিত্তিতেই পুলিশ নিয়মিত প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে না ঘটে, সেজন্য পুলিশ সর্বদা সতর্ক রয়েছে।’

 

এই অবস্থায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, দলটি পুনরায় সংগঠিত হয়ে রাজধানীমুখী যে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আরও পড়ুনঃ আন্দোলনের প্রস্তুতি? গোপনে ঢাকামুখী হচ্ছেন আওয়ামী নেতাকর্মীরা

WhatsApp
Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
Telegram