| ৯ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম:

‘আমি মারা গেলে তুমি শহীদের গর্বিত মা হবে’ : বলেছিল রেজাউল

‘আমি মারা গেলে তুমি শহীদের গর্বিত মা হবে’ : বলেছিল রেজাউল

‘আমি মারা গেলে তুমি শহীদের গর্বিত মা হবে’- ছাত্রবিরোধী বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যোগ দিতে নিষেধ করলে মায়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এ কথাই বলেছিল মো. রেজাউল করিম।

মাত্র ১৬ বছর বয়সী রেজাউল ছিল মীরহাজারীবাগ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। ৪ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা সংলগ্ন এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় সে। ওইদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে রেজাউলও ছাত্রআন্দোলনে যোগ দিয়েছিল।

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার সংস্কার চেয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা পরে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে রূপ নেয়। রেজাউলের মৃত্যুর ঠিক পরদিন, ৫ আগস্ট প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসন চালানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।

সম্প্রতি যাত্রাবাড়ীর মীরহাজারীবাগ এলাকার নিজ বাসায় এই প্রতিবেদক রেজাউলের শহীদ হওয়া নিয়ে কথা বলতে গেলে শোকে পাথর রেজাউলের মা রাশিদা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের তিন সন্তানের মধ্যে রেজাউল ছিল একমাত্র ছেলে। এই কষ্ট কীভাবে সইব?’

বড় মেয়ে ফাতেমাতুজ জোহরা (১৮) দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে, আর ছোট মেয়ে তানজিলা (১০) তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

জুলাই মাসজুড়ে রাস্তায় গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছিল। তখন রাশিদা ছেলেকে আন্দোলনে যেতে নিষেধ করতেন। কিন্তু রেজাউলের দৃঢ়চেতা মনোভাব আর সংগ্রামের প্রতি অঙ্গীকরের কারণে তাকে থামানো যায়নি।।রাশিদা বলেন, ‘একদিন যখন আমি ওকে আন্দোলনে যেতে নিষেধ করলাম,

‘সে বলেছিল, যদি আন্দোলনে যাই, কী হবে? যদি গুলিতে মারা যাই, আমি শহীদ হব, তুমি শহীদের মা হবে।’ এখন এই কথাগুলোই আমার মাথার ভেতর বাজে।’ তিনি আরও জানান, রেজাউল পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল, ভালো ছেলে ছিল।

রেজাউলের বাবা মো. আল আমিন মির (৪৮), একজন ইলেকট্রিশিয়ান। তিনি জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকেই রেজাউল অংশ নিচ্ছিল।

তিনি বলেন, ‘৪ আগস্ট বিকেলে কুতুবখালীতে বন্ধুদের সঙ্গে আন্দোলনে যায় রেজাউল। সেখানে বিকেল ৫টার দিকে গুলিবিদ্ধ হয় সে। কিন্তু আমি সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার দিকে জানতে পারি।’

মির বলেন, একজন ফোন করে জানান যে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) গিয়ে ছেলের খোঁজ নিতে হবে। হাসপাতালে গিয়ে তিনি ৭ নম্বর কক্ষে ছেলেকে নিথর অবস্থায় স্ট্রেচারে পড়ে থাকতে দেখেন।

তিনি বলেন, ‘ভর্তি করানোর পরও কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরে জরুরি বিভাগ থেকেই কোনো ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া লাশ নিয়ে বাসায় ফিরি।’

দাফনের সময় নানা প্রতিবন্ধকতা ও প্রশাসনিক উদাসীনতা ছিল বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান হাবুর কাছে গিয়ে ডেথ সার্টিফিকেট চাইলে তিনি দিতে রাজি হননি।

কাউন্সিলর তাদের হয়রানি না করার আশ্বাস দিলেও পরদিন (৫ আগস্ট) কবরস্থানে লাশ দাফন করতে গেলে সেখাকোর লোকজন তদন্ত দল না আসা পর্যন্ত দাফন করা যাবে না বলে জানায়।

অসহায় হয়ে মির শ্যামপুর থানায় গিয়ে তদন্ত দল পাঠানোর অনুরোধ করেন, কিন্তু ওসি তা নাকচ করে দেন।

মির বলেন, ‘আমি ওসিকে বলি, আমি আমার ছেলের হত্যার ঘটনায় মামলা করতে চাই, কিন্তু উনি মামলা নিতে রাজি হননি। উনি বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলরের অফিস থেকে সার্টিফিকেট এনে দাফন শেষ করতে।’

পরে তারা আবার কাউন্সিলরের অফিসে যান এবং একটি সাধারণ ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে জুরাইন কবরস্থানে ছেলেকে চিরনিদ্রায় শায়িত করেন।

ভাঙা কণ্ঠে মির বলেন, ‘আমরা এখন বিধ্বস্ত। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে আমি কোনো কাজে মন দিতে পারছি না। ওর মা প্রতিরাতে কাঁদে।’

রেজাউলের বন্ধু মো. রাকিব তাকে সাহসী ও নিষ্ঠাবান বন্ধু হিসেবে স্মরণ করেন। একই পাড়ায় ভিন্ন স্কুলে পড়লেও তাদের বন্ধুত্ব ছিল গভীর। রাকিব বলেন, ‘রেজাউল ছিল আমার প্রিয় বন্ধুদের একজন।’

ঘটনার দিন বিকেলে রাকিব ও রেজাউল একসঙ্গে টোল প্লাজার কাছে স্লোগান দিচ্ছিল। ঠিক তখনই পেছন থেকে গুলিবিদ্ধ হয় রেজাউল।

রাকিব বলেন, ‘গুলির পর রেজাউল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে, রক্তে ভেসে যায় চারপাশ।’ আন্দোলনকারী অন্যদের সহায়তায় তাঁরা দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে রেজাউলকে ঢামেকে নিয়ে যান। সেদিন রাকিব নিজেও একটি রাবার বুলেটে আহত হন।

রেজাউলের মৃত্যু পরিবার ও বন্ধুদের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। তাঁর পরিবার খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি- মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে।

সূত্র-বাসস

তারেক রহমানই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য

‘আমি মারা গেলে তুমি শহীদের গর্বিত মা হবে’ : বলেছিল রেজাউল

৯ আগস্ট ২০২৫ – বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর জাতীয় কাউন্সিলে এক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে বলেছেন, তারেক রহমানই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী। তার এসব কথা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সৃষ্টি করেছে।

বক্তব্যের শুরুতে মির্জা ফখরুল দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে বিদ্যমান পারস্পরিক হিংসার ‘কালচার’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশে একটি হিংসাত্মক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, যা আমাদের সমাজ ও রাজনীতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। আমাদের এই কালচার থেকে বেরিয়ে এসে সংলাপ ও ঐক্যের পথ ধরতে হবে।

সরকারের নানান নীতির সমালোচনা করে তিনি বিশেষ করে ওষুধ শিল্প নীতি নিয়ে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু ভোটের অধিকার নয়, মানুষের মৌলিক সব অধিকার নিশ্চিত করাই সরকারের প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু বর্তমান সরকার এসব বিষয় এড়িয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জনগণের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য অধিকার নিশ্চিত না হলে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না।

এছাড়া গত জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি তিনি বিশেষ আহ্বান জানান। তার ভাষ্য, আন্দোলনে আহত মানুষের জন্য যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি। আমরা আশা করি সরকার দ্রুত এসব আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করবে।

রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি একাধিকবার দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করছে বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের ভোটাধিকার ও মানবাধিকারের সুরক্ষা আমাদের অঙ্গীকার।

দুমকিতে পুলিশের অভিযানে ৬৫০ পিস ইয়াবাসহ যুবক গ্রেফতার

‘আমি মারা গেলে তুমি শহীদের গর্বিত মা হবে’ : বলেছিল রেজাউল

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৬৫০ পিস ইয়াবাসহ এক যুবককে আটক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার লেবুখালী পায়রা সেতু টোল প্লাজার চেকপোস্টে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন এসআই নুরুজ্জামান ও এএসআই দুলাল, সঙ্গীয় ফোর্সসহ।

গ্রেফতারকৃত যুবকের নাম মো. জিয়াউর রহমান জিয়া (২৪)। তিনি কক্সবাজার পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের সুগন্ধা লাইট হাউস এলাকার খুকু হাওলাদারের ছেলে। বর্তমানে তিনি পটুয়াখালী সদর উপজেলার পিয়ারপুর মৌকরনে বসবাস করছিলেন।

দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, অভিযানে জিয়ার কাছ থেকে মোট ৬৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দুমকি থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা (মামলা নং–৩, তারিখ: ৯ আগস্ট ২০২৫) দায়ের করে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য মালয়েশিয়ার বড় সুখবর: চালু হলো মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা

‘আমি মারা গেলে তুমি শহীদের গর্বিত মা হবে’ : বলেছিল রেজাউল

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে মালয়েশিয়া সরকার অবশেষে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বহুল প্রত্যাশিত মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা (MEV) চালু করেছে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেয়। এতে জানানো হয়, এই সুবিধা শুধু বৈধ পাস ল্যান কার্ড কেদাতাং সেমেন্টারা (PLKS) ধারকদের জন্য প্রযোজ্য হবে এবং আন্তর্জাতিক প্রবেশপথে ইমিগ্রেশন বিভাগ এর সমন্বয় করবে।

মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে, এই উদ্যোগ অভিবাসী কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়া ও নিজ দেশে যাতায়াত আরও সহজ করবে, একইসাথে ইমিগ্রেশন পাসের অপব্যবহার কমাবে। তাছাড়া বিদেশে অবস্থানরত মালয়েশিয়ার দূতাবাসগুলোতে নতুন ভিসা আবেদনের চাপও হ্রাস পাবে।

বাংলাদেশি কর্মীরা এখন থেকে ব্যক্তিগত বা পারিবারিক প্রয়োজনে সহজেই দেশে আসা-যাওয়া করতে পারবেন, যা আগে সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসার কারণে সীমাবদ্ধ ছিল।

গত ১৫ জুলাই কুয়ালালামপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন এক ফেসবুক পোস্টে এই ভিসা চালুর বিষয়ে অবহিত করেছিল।

বাংলাদেশ সরকারের ধারাবাহিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলেই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে বলে জানিয়েছে দূতাবাস। গত মে মাসে মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করে। আলোচনার পর ১০ জুলাই এ বিষয়ে সরকারি পরিপত্র জারি করা হয়।

এমইভি চালুর ফলে বর্তমানে ১৫টি শ্রমিক সরবরাহকারী দেশের মধ্যে থাকা বাংলাদেশি কর্মীরা অন্যান্য দেশের শ্রমিকদের মতোই একাধিকবার যাতায়াতের সুযোগ পাবেন। এতে তাদের ভ্রমণ সুবিধা ও কর্মজীবনে স্বস্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।

×