
নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে পথচলা শুরু করেছিল ‘জুলাই আন্দোলনের’ ছাত্রনেতারা। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তাদের মধ্য থেকেই অনেকে জড়াচ্ছেন চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির মতো অপরাধে। এতে প্রশ্নের মুখে পড়েছে তাদের নেতৃত্ব, আস্থা হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতা ও অর্থের মোহে অনেকেই আদর্শচ্যুত হচ্ছেন। যারা একদিন জাতিকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারাই এখন অভিযোগের মুখে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম বলেন, “নির্লোভ থাকার পরীক্ষায় ফেল করেছে কিছু জুলাই যোদ্ধা। বয়স, অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বের ভারসাম্য না থাকায় তারা রাজনীতির চোরাবালিতে হারিয়ে যাচ্ছে।”
অন্যদিকে অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন মনে করেন, “ক্ষমতার আগে অভিজ্ঞতা জরুরি। এখনই নেতৃত্বে যেতে চাওয়ার লোভ অনেককে ধ্বংস করছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিভক্তি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে।”
এই বাস্তবতা অস্বীকার করেন না জুলাই আন্দোলনের অনেকে। তাদের বক্তব্য, সবাই নয়, কিছু ব্যক্তি দুর্নীতিতে জড়িয়েছে, যারা আদর্শের নয় বরং ভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, “সরকারের উচিত ছিল দায়িত্বশীল অভিভাবকসুলভ ভূমিকা রাখা। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা সেই সহযোগিতা পাইনি। যদিও সত্য অভিযোগ আছে, তেমনি প্রচার-প্রচারণার প্রোপাগান্ডাও রয়েছে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ বলেন, “বিপ্লবের পর সংগঠন গড়ে না তোলার ব্যর্থতা রাষ্ট্রের। কেউ কেউ দুর্নীতির সাথেও জড়িয়েছে, যা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।”
উল্লেখ্য, এনসিপি গঠনের পর থেকেই জুলাই যোদ্ধারা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চিহ্নিত হন। এর প্রভাবে তাদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে গড়ে ওঠা ভাবমূর্তি ধীরে ধীরে বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
তবে জুলাই হিরোদের দাবি, সরকারের দিক থেকে প্রয়োজনীয় অভিভাবকসুলভ ভূমিকা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সহনশীল আচরণ পেলে বিভ্রান্তি ও বিতর্ক এড়ানো যেতো।