কুয়াকাটা পর্যটকদের ঢল,সমুদ্র সৈকতে আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে মুখর সৈকত, পরিবেশের অবস্থা উদ্বেগজনক

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ঈদের পঞ্চম দিনেও ছিল আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে পূর্ণ। ঈদের প্রথম দিন থেকেই কুয়াকাটায় পর্যটকদের বিপুল ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছিল, তবে আজকের দিনটিতে সৈকত ছিল আরও প্রাণবন্ত। পর্যটকরা ছোট-বড় সবাই সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করেছেন। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে, সাগরের নোনা জলে গা ভাসাতে, আর বালিতে খেলার জন্য সৈকত ছিল উপভোগ্য। শিশুরা মেতে উঠেছিল সাগরের পানিতে, আর বড়রা আরাম-আলায় সমুদ্রের তাজা হাওয়ায় শান্তি খুঁজছিলেন।
যতটা আনন্দ ছিল, ততটাই সমস্যা দেখা গেছে সৈকতের পরিবেশে। সৈকতজুড়ে খাবারের প্যাকেট, ডাবের খোসা, প্লাস্টিকের বোতলসহ বিভিন্ন ময়লা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইমরান বলেন, “সাগর পাড়ে যথেষ্ট ময়লা ফেলার ডাস্টবিন না থাকার কারণে, পর্যটকরা যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে যাচ্ছেন, যা সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট করছে।”
ডাব বিক্রেতা মো. মাহিদ বলেন, “আমরা ডাবের খোসাগুলো একত্রে রেখেদি পরে অনেক গবির রাতে পৌরসভার ট্রাকে ময়লা নিয়ে জায়, কিন্তু অনেক ব্যবসায়ী সেগুলো এক জায়গায় রাখেন না, যার ফলে সৈকত ময়লা দিয়ে ভরে যায়।” তিনি আরও বলেন, “পর্যটকদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা উচিত যাতে তারা ময়লা যেখানে-সেখানে না ফেলে, পরিবেশের দিকে মনোযোগ দেয়।”
এদিকে, হাওয়াই মিঠাই বিক্রেতা মো. মিরাজ জানান, “ঈদের পর ব্যবসা ভালো চলছে, গত মাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবো।” আচার বিক্রেতা মো. ছানি বলেন, “বেচাকেনা ভালো হচ্ছে, ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা বেশি আসায় বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে।”
এদিকে কুয়াকাটা থেকে ফিরতে আসা পর্যটকদের জন্য বাস টিকিটের সংকট দেখা দিয়েছে। শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের মেসকাত হোসেন জানান, “৫ তারিখ পর্যন্ত সব টিকিট বুকিং হয়ে গেছে, ৬ তারিখ থেকে কিছু সিট খালি হবে, তবে সেগুলোও খুব দ্রুত বুক হয়ে যাচ্ছে।” টিকিট না পেয়ে অনেক পর্যটক ফিরে যাচ্ছেন, ফলে বাস টিকিটের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
স্থানীয় মো.আরিফ বলেন “কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষা করতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আরও সচেতন হতে হবে। সৈকতের চারপাশে ময়লা ছড়িয়ে পড়া, বিশেষত খাবারের প্যাকেট, প্লাস্টিকের বোতল ও ডাবের খোসা, পরিবেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। ব্যবসায়ীদের উচিত, ময়লা ফেলার সঠিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং পর্যটকদের এই ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করা। যদি সৈকতের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত না করা যায়, তবে কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারাতে পারে। তাই, প্রতিটি ব্যবসায়ীকে নিজস্ব উদ্যোগে সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং পর্যটকদের পরিবেশবান্ধব আচরণে উৎসাহিত করতে হবে। এমনকি ময়লা ফেলার জন্য পর্যাপ্ত ডাস্টবিন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখতে হবে।”